• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

চোখের পাওয়ার-বিভ্রান্তি – ডায়াবেটিস ও গ্লুকোমা

February 2, 2010

কমলা বেগম (ছদ্মনাম) তাঁর চোখের দৃষ্টির তারতম্যের উপসর্গ নিয়ে এক বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের চেম্বারে উপস্থিত হয়েছেন। চক্ষু বিশেষজ্ঞ তাঁর চোখ পরীক্ষা করে চশমার ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী কমলা চশমা নিয়েছেন। চশমায় তিনি চিকিত্সকের চেম্বারে যেমন পরিষ্কার দেখছিলেন, তেমন দেখছেন না। চশমায় কেমন যেন অস্বস্তিবোধ হয় তাঁর। স্বামীর সঙ্গে কথা বলেন। স্বামী আশ্বস্ত করেন এই বলে যে নতুন চশমায় এমন হয়, কিছুদিন ব্যবহারে তা কেটে যায়।
কিন্তু না। চশমায় তাঁর অস্বস্তিটা কাটছে না, বরং মাত্রাটা যেন বাড়ছেই। স্বামীকে নিয়ে আবার যান ওই বিশেষজ্ঞের কাছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক আবার চোখ পরীক্ষা করলেন। চশমার পাওয়ারে বেশ পরিবর্তন। ‘মাইনাস’টা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক চিন্তিত হন। কমলার কাছে জানতে চান, তাঁর ডায়াবেটিস রয়েছে কি না। ‘ডায়াবেটিস? না তো?’ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের প্রশ্নের জবাবে জানান কমলা। ডায়াবেটিসের কোনো পরীক্ষা আগে করাননি। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক পরামর্শ দেন যেন ডায়াবেটিসের পরীক্ষাটা করিয়ে নেন। কমলার মন খারাপ হয়। এসেছেন চশমার জন্য, আর ডাক্তার বলছেন ডায়াবেটিস আছে কি না! মনে মনে বিরক্ত হন চিকিত্সকের ওপর। বিরক্তি জাগে চশমায়। তাঁর প্রয়োজন ছিল কাছের কাজে চশমার। তা ইদানীং আর লাগছে না। চশমা ছাড়াই কাছের জিনিস ভালো দেখছেন। সুতরাং রক্তের সুগার পরীক্ষা করিয়ে আবার এই চিকিত্সকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই—সিদ্ধান্ত নেন কমলা।
কমলা চোখের চিকিত্সকের পরামর্শ না মেনে ঘরসংসারের কাজে মনোযোগ দেন। খাওয়াদাওয়া বাড়িয়ে দেন।
একদিন হঠাত্ তাঁর চোখে ব্যথা শুরু হয়। চোখ লাল হয়ে পানি পড়া শুরু করে। ব্যথার মাত্রাটা এমন তীব্র হয়, বাড়িতে রাখা প্যারাসিটামলেও তা নিরসন হয় না। তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে জেলা সদরে ওই চোখের চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চোখের প্রেশার বেশি! যার স্বাভাবিক মাত্রা ২০ মিমি পারদের নিচে থাকার কথা, তা এখন ৫৫ মিমি পারদে উঠেছে।
আবার জরুরি ভিত্তিতে কমলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর রক্তের চিনির মাত্রা দেখা হয়। রক্তে চিনির মাত্রা ৩০-এর ওপর (৩০ মিমল/লিটার, যা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকার কথা ৮-এর নিচে)। ওপরে কমলা বেগমের চোখের উপসর্গের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তার মূলে রয়েছে তাঁর অজান্তে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। কমলা বেগমের চোখের মূল সমস্যা ছিল দৃষ্টিশক্তির তারতম্য ও চোখের উচ্চচাপ। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে নিচে এ দুটি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিচ্ছি—

দৃষ্টির তারতম্য
চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপর ডায়াবেটিসের প্রভাব রয়েছে। রক্তে চিনির মাত্রার ওঠানামার সঙ্গে দৃষ্টির তারতম্য হয়। চিনির মাত্রা কমে গেলে চোখের পাওয়ার প্লাসের দিকে যায়। ওই সময় রোগীর কাছের দৃষ্টিতে অসুবিধা হয়। আবার রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের পাওয়ার মাইনাসের দিকে যায়। তখন রোগীর দূরের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়, কিন্তু কাছের দৃষ্টি ভালো হয়। বিশেষ করে, যাঁরা প্রেসবায়োপিয়ার রোগী, অর্থাত্ ৪০-এর ওপর বয়স হওয়ার দরুন যাঁরা কাছের দৃষ্টির জন্য চশমা ব্যবহার করেন, তাঁদের চশমার প্রয়োজন কমে যায়। আমাদের কমলা বেগম ছিলেন প্রেসবায়োপিয়ার রোগী। ডায়াবেটিসের দরুন চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তিনি চশমা ছাড়াই কাছে ভালো দেখছিলেন। ডায়াবেটিসের জন্য যে এ অবস্থা হয়েছে, তা তাঁর ধারণার বাইরে ছিল।

চোখের উচ্চচাপ
আমাদের সবার চোখের অভ্যন্তরীণ স্বাভাবিক মাত্রার চাপ রয়েছে এবং তা আছে বলেই চোখ চুপসে যায় না। এই চাপ যখন বেড়ে যায়, তখন স্নায়ু আক্রান্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দৃষ্টি কমে যায়। চোখের এই রোগকে ‘গ্লুকোমা’ বলা হয়। গ্লুকোমা বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। এক ধরনের গ্লুকোমায় রোগীর চোখের দৃষ্টি হ্রাসের সঙ্গে চোখ লাল হয়ে ব্যথা শুরু হয়। আরেক ধরনের গ্লুকোমা রয়েছে, তাতে রোগীর তেমন তীব্র কোনো উপসর্গ থাকে না, কেবল দৃষ্টি কমে আসে। ডায়াবেটিসের রোগীরা উভয়বিধ গ্লুকোমায় আক্রান্ত হতে পারেন। রক্তে চিনির মাত্রা আকস্মিক বেড়ে গেলে প্রথম ধরনের গ্লুকোমায় ডায়াবেটিস রোগীরা আক্রান্ত হন। এ ক্ষেত্রে আমাদের চোখের ভেতরের লেন্স রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার দরুন ফুলে এ সমস্যা তৈরি করে। কমলা বেগমের ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে। কমলা বেগম চিকিত্সকের পরামর্শে প্রথমেই যদি রক্তের সুগার মাপিয়ে নিতেন, তাহলে এ সমস্যা হতো না। তাঁকে যদি চিকিত্সক ডায়াবেটিসের প্রয়োজনীয় চিকিত্সা দিতেন, তাহলে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকত। তিনি চিকিত্সকের পরামর্শ না মেনে বরং নিকটদৃষ্টির জন্য চশমার প্রয়োজনীয়তা কমে যাওয়ায় ‘সন্তুষ্টচিত্তে’ নিয়ন্ত্রণহীন আহারসামগ্রী গ্রহণ করছেন, যার দরুন একপর্যায়ে গ্লুকোমার শিকার হন।
ওপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি, ডায়াবেটিস কেবল চোখের দৃষ্টিশক্তির তারতম্যই তৈরি করে না, কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্লুকোমার মতো দৃষ্টিনাশী রোগের সূত্রপাত ঘটায়। গ্লুকোমা একটি মারাত্মক রোগ, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি নিঃশেষ করে দেয়। ছানি রোগের ক্ষেত্রে ছানি সারিয়ে দৃষ্টি ফেরানো সম্ভব। কিন্তু গ্লুকোমার দৃষ্টি হ্রাস হলে তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না।
তবে প্রাথমিক পর্যায়ে গ্লুকোমা নির্ণীত হলে দৃষ্টি হ্রাসের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়। ডায়াবেটিক রোগীদের এ ক্ষেত্রে তাই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

শফিকুল ইসলাম
অধ্যাপক, চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০৩, ২০১০

Previous Post: « নবজাতকের জেন্ডার নির্ণয়
Next Post: মনের জানালা – ফেব্রুয়ারী ০৬, ২০১০ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top