• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

কল্পনা করুক, সত্যটাও জানুক

January 31, 2011

ধরা যাক, মেয়েটির নাম দীপান্বিতা। ছয় বছর বয়স। এ বয়সেই স্কুলের ‘বড়’ ক্লাসের ছাত্রী হয়ে গেছে। প্লে-গ্রুপ, নার্সারি পার হয়ে এখন কেজি ওয়ানে। অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের যে বৈঠক হয়, তাতে শিক্ষকেরা ওকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, কিন্তু শুধু একটি বিষয়েই ছোট্ট অনুযোগ তাদের, দীপান্বিতা ক্লাসে খুব বেশি কথা বলে। শিক্ষক যখন ক্লাস নেন, তখন ও পাশের সহপাঠীর সঙ্গে আলাপে মশগুল।
অনুযোগ শুনে মা দীপান্বিতাকে জিজ্ঞেস করেন, কী এত গল্প করিস তুই?
দীপান্বিতা বলতে পারে না কখন ও গল্প করে।
একদিন ক্লাস শেষে ওর এক সহপাঠীকে ডেকে নেন মা। জিজ্ঞেস করেন, দীপান্বিতা আজ কী গল্প করেছে?
আধো বুলিতে ও যা বলে তার সারমর্ম হলো, কাল রাতে নাকি দীপান্বিতার কাছে পরি উড়ে এসেছিল। ওর মগ ভেঙে গেছে, সে কথা পরিকে বলেছিল দীপান্বিতা, পরি একটা লাল রঙের মগ নাকি দিয়ে গেছে।
মা ভাবনায় পড়েন। মগ ভেঙেছে বটে, কিন্তু লাল রঙের মগ তো কেনা হয়নি! মগ ভাঙার পর এখন দীপান্বিতার মগটি সবুজ। লাল কেন বলল ও?
দীপান্বিতার সঙ্গে কথা বলেন মা। দীপান্বিতা বলে, লাল মগ ওর প্রিয়। তাই ও ভেবে নিয়েছে সবুজ মগটাই লাল মগ।
পরদিন মা দীপান্বিতাকে লাল মগ কিনে দেন। স্কুলে গিয়ে উচ্ছ্বসিত দীপান্বিতা বলে, জানো, পরি প্রথমে ভুল করে সবুজ মগ দিয়েছিল। যখন জানতে পেরেছে। আমি লাল মগ পছন্দ করি, তখন সেটা পাল্টে দিয়েছে।
শুধু কি দীপান্বিতা? শিশুরা বাস্তব আর কল্পনাকে আলাদা করে নিতে পছন্দ করে না। যারা ছোটবেলায় দাদি-নানি-মা-বাবা-খালা-ফুপুর কাছে রূপকথার গল্প শুনেছে, তাদের কাছে রাজা, রানি, রাজপুত্র, রাক্ষস, শাঁখচুন্নি কোনো কল্পলোকের বাসিন্দা নয়। আশপাশের মানুষ যেমন ওদের মনের কাছাকাছি বাস করে, তেমনি রূপকথার চরিত্রগুলোও ওদের মনোজগৎকে নাড়িয়ে দেয়। এখন তো কমিকস আর কার্টুনের কারণে ব্যাটম্যান, সুপারম্যানসহ আরও কত চরিত্র এসে ভিড় জমাচ্ছে শিশুদের মনে। তাদেরও জায়গা দিতে হবে। শিশুদের কল্পনার জগৎকে সুন্দর করার জন্য শিশুদের ভাবনার ধরনটাও বুঝতে হবে অভিভাবকদের। আমাদের দ্বীপান্বিতার মা একটি ভালো কাজ করেছেন। পরির কাছ থেকে একটি লাল মগের প্রত্যাশা ছিল দীপান্বিতার। তিনি শিশুটির ইচ্ছা পূরণ করেছেন। মেয়েটা ভাবুক না, এটা পরিরই কাজ, তাতে কার কী ক্ষতি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ও যখন কল্পনা ও বাস্তব আলাদা করে নিতে পারবে, তখন ও নিজেই নিজের মতো করে ভাবতে পারবে। মা-বাবা শুধু লক্ষ রাখবেন, ও ওর মনের জগৎটার চাষবাস ঠিকভাবে করছে কি না, ওর ওড়ার আকাশটা যথেষ্ট প্রশস্ত কি না।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম বললেন, কল্পনাপ্রবণ হওয়াটা শিশুদের সহজাত প্রবৃত্তি। কল্পনা ও বাস্তবের যে চরিত্রগুলো পছন্দ করে, তার মধ্যে সেরা চরিত্রটির মতো হওয়ার চেষ্টা করে সে। আর হ্যাঁ, নিজের চাহিদার কিছু অপূর্ণ থেকে গেলে সে চাহিদা পূর্ণ করে কল্পনায় ভেসে। এখানে মা-বাবা আর শিক্ষকদের মনে রাখতে হবে, শিশুটি যে চরিত্রটিকে পছন্দ করছে, সে চরিত্রটি আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। কল্পনা ডালপালা মেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজেকে জাহির করার প্রবণতা কাজ করে। বন্ধুদের অনেকেই অনেক সুবিধা পাচ্ছে, ও পাচ্ছে না। বাবা-মা হয়তো সে চাহিদাটুকু পূরণ করতে পারেন, কিন্তু শিশুটির ভাবনা কোন দিকে যাচ্ছে, সেদিকে নজর দেন না বলেই শিশুটি কল্পনার মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করে নেয়।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের চাইল্ড নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক নায়লা খান জোর দিলেন ইতিবাচক থাকার ব্যাপারে। শিশুদের প্রতিটি পদক্ষেপকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখতে হবে। শিশুদের সঙ্গে বাবা-মায়ের কথোপকথন থাকতে হবে। কোন ব্যাপারটি শিশু কোনভাবে দেখছে, তা বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে অভিভাবকদের। অনেক সময়ই কল্পনার জগতে বসবাসের কারণে শিশুরা অসংলগ্ন প্রশ্ন করতে পারে; অভিভাবকদের উচিত, সেই অসংলগ্ন প্রশ্নটিকেই সৃজনশীল উত্তরের দিকে নিয়ে যাওয়া। এমন তো নয়, কোনো কারণে শিশুদের ওপর রাগ করা যাবে না। কিন্তু সেটাও যেন ইতিবাচক হয়। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা যদি প্রতিদিন সন্তানদের একটি করে গল্প বলেন, তাহলে ওর কল্পনার জগৎটি ঋদ্ধ হয়। মূল্যবোধটি খুব জরুরি বিষয়। বড় বাড়ি, বড় গাড়ি আছে যাদের, তাদের বড়লোক বলব, নাকি চিন্তায়-কল্পনায় যে বড়, নৈতিকভাবে যে বড় (তার টাকা থাকুক আর না-ই বা থাকুক) তাকে আমরা বড়লোক বলব, সে ব্যাপারে স্কুলের শিক্ষক ও বাবা-মায়ের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। আর হ্যাঁ, শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের মধ্যে সমঝোতা থাকা দরকার। শিশুদের কোনো কথা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না, বরং খুবই গুরুত্ব দিয়ে ওদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। দিনে অন্তত ওদের তিন-চারটি কাজের প্রশংসা করতে হবে। ‘লক্ষ্মী মেয়ে’, ‘লক্ষ্মী ছেলে’, ‘বাহ!’, ‘চমৎকার তো!’—এ ধরনের প্রশংসাবাক্য ওদের ইতিবাচকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।
আর একটি জায়গা আছে, যা স্পর্শ করা হয়নি এখনো। ধরা যাক, ক্লাস থ্রি-পড়ুয়া এক ছেলে বিজ্ঞান পরীক্ষায় খুব খারাপ নম্বর পেল। শিক্ষক বললেন, অভিভাবকের স্বাক্ষর নিয়ে এসো। ছেলেটির মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিরে, তোকে খাতা দেয়নি এখনো?’
ছেলেটি বলল, ‘টিচার তো অসুস্থ, এখনো খাতা দেননি।’
কিন্তু পরদিন অন্য এক অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলতেই ছেলেটির থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ল। তিনি জানালেন, বিজ্ঞান পরীক্ষায় তার ছেলে খুব ভালো নম্বর পেয়েছে।
মা গেলেন শিক্ষকের কাছে। বললেন, ‘আপনি আমার ছেলেকে পরীক্ষার খাতা দেননি?’
শিক্ষক তো অবাক। বললেন, ‘সবার সঙ্গেই তো ওর হাতে খাতা দিয়েছি বাড়ি থেকে স্বাক্ষর করে আনার জন্য। ও যে বলল, আপনি অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে আছেন, তাই স্বাক্ষর আনতে পারছে না।’
মা এবং শিক্ষক—দুজনের কাছেই ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে গেল। এ ধরনের সমস্যায় পড়লে কী করা?
আনন্দ নিকেতন ইউরোপিয়ান স্কুলের অধ্যক্ষ সামসি এ হাসান এ ব্যাপারে বললেন, ‘শিশুরা কখনোই মিথ্যা বলে না, বরং আমরা বলব শিশুরা অনেক সময়ই ভুল বলে। আর এই ভুলের পথে সে যদি আরও এগিয়ে যায়, তাহলে সমস্যা হতে পারে। তাই চারপাশের পরিবেশটা শিশুর অনুকূলে রাখতে হবে। শিশুকে সত্য কথা বলা শেখাতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষকেরা যদি শিশুদের আপন করে কাছে টেনে তার মনের কথা শুনতে চান এবং চিন্তাভাবনা কীভাবে করা উচিত সে বিষয়ে গল্পের ছলে বোঝান, তবে শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই সবকিছু গ্রহণ ও চিন্তা করতে পারবে। তার কল্পনার জগৎ হবে অনেক বেশি বাস্তবসম্মত এবং স্বাভাবিক।’

জাহীদ রেজা নূর
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৮, ২০১০

Previous Post: « Health services in bad shape
Next Post: তেলে তাজা »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top