• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

মুদ্রাদোষ কাটাতে নিজের চেষ্টাই যথেষ্ট

October 28, 2008

টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে দেখতে দেখতে কলেজপড়ুয়া সিমির চারপাশ নিয়ে আর কোনো খেয়াল নেই। কম তো আর চ্যানেল নয়। হঠাৎ একটা দেশি চ্যানেলের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানের উপস্থাপেক দিকে আটকে গেল চোখ। কী আনমনে উনি হাতের নখ দাঁত দিয়ে খুঁটছেন! সিমি তো হেসেই গড়িয়ে পড়ে, ‘এমনও হয়, এটা কেমন অভ্যাস, লোকে দেখছে না!’ পাশ থেকে সিমির মা ভারী মুখ গম্ভীর করে বললেন, ‘যেমন এই আমি দেখছি তোর নখগুলো। শুধু তো নখ নয়, চারপাশের চামড়াও তো আর অস্ত নেই। এটা কেমন অভ্যাস?’ মানুষের মুদ্রাদোষগুলো হলো এমনই। নিজের খেয়ালের বাইরে অনবরত চর্চা করতে থাকে। কিন্তু বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় অপরের। মুদ্রাদোষ আর বাজে অভ্যাস কিন্তু এক জিনিস নয়। হাতের নখ কামড়ানো, বারবার পা নাড়ানো, আনমনা থাকতে থাকতে মাথা চুলকানো, নাকের ভেতর আঙুল ঢুকিয়ে চুলকানো, হাতের কাছে লম্বা কিছু পেলেই কানে ঢুকিয়ে দেওয়া, আঙুল ফোটানো, কথা বলার সময় জোরে জোরে হাত নেড়ে বা আঙুল তুলে কথা বলা ইত্যাদি হলো মুদ্রাদোষ। মানুষ নিজের অজান্তেই এগুলোর চর্চা করতে থাকে। কিন্তু ভয়ানক বিরক্তির সৃষ্টি করে সামনে বসে থাকা মানুষজনের বা নিকট আত্মীয়স্বজনদের। আর ক্ষতি? সেটা যার মুদ্রাদোষ আছে, ক্ষতিটা অবশ্যই তার। শারীরিক বা মানসিক, তবে সেটাও তার খেয়ালে থাকে কি না তা ভাবার বিষয়। মানসিক রোগের বিশেষজ্ঞ ডা· রোকসানা আক্তার মানুষের মুদ্রাদোষকে মোটেও সহজভাবে নেন না। মুদ্রাদোষের বিভিন্ন অভ্যাস মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করলে তা ব্যক্তির মানসিক বিপর্যস্ততাই নিশ্চিত করে। এ ধরনের অভ্যাস ব্যক্তির স্বজ্ঞানে কিংবা অন্যমনস্কতা উভয় পরিস্থিতিতেও হতে পারে। মুদ্রাদোষ প্রায় সবার মধ্যেই থাকতে পারে। খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে থাকলে, আনমনা হয়ে থাকলে কিংবা খুব অস্থির থাকলে আমরা আমাদের মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক আচরণেরও। মুদ্রাদোষ এ ধরনের মানসিক অস্থিরতা, স্থবিরতা, মনোযোগের অভাব, সচেতনতার অভাব, চারপাশের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাব এমনকি নৈতিকতা বোধের অভাব থেকে সৃষ্টি হতে পারে। গুরুজনরা বসে আছেন, তাঁদের সামনে বসে পা নাড়ানো, ইন্টারভিউ বোর্ডে গিয়ে পা নাড়ানো-এসব অভ্যাস নিজের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর ছাড়া আর কিছু নয়। বারবার সজোরে হাত নাড়ানো, চুলকানো-এগুলো মানুষের চারিত্রিক দুর্বলতাই প্রকাশ করে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মুদ্রাদোষ থাকার দোষে অনেককে বাতিল ঘোষণা করার রেওয়াজ আছে। সাক্ষাৎকার, অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা কিংবা পাসপোর্ট বা ভিসা অফিসে মুদ্রাদোষ থাকার জন্য ভালো বিপর্যয় আসার জোর আশঙ্কা আছে। তাই মুদ্রাদোষকে সহজভাবে না নেওয়াই উচিত। আমাদের দেশে সচেতনতার অভাব থাকার কারণে প্রায় অধিকাংশ মানুষের মুদ্রাদোষ থাকার ভালো রেওয়াজ আছে।

ডা· রোকসানা মনে করেন, আমাদের মুদ্রাদোষগুলো থেকে আমার নিজেরাই নিজেদের মুক্তি দিতে পারি। কারণ মুদ্রাদোষগুলো পরিহার করার জন্য নিজের প্রচেষ্টাই শতভাগ যথেষ্ট। তাই প্রয়োজন স্বদিচ্ছা এবং আত্মপ্রত্যয়।

নিজের মুদ্রাদোষটি শনাক্ত করে সব সময় সচেতন থাকতে হবে, যাতে মনের ভুলে আমরা যেন এমন অভ্যাসের চর্চা না করি। যিনি আনমনে বারবার পা নাড়াতে থাকেন, তাঁর বসার ধরন বদলে ফেলতে হবে। মাটির ওপর পা জোড়া জোরের সঙ্গে ফেলে বসা যেতে পারে। যিনি কথা বলতে বলতে হাত নাড়েন, তিনি হাত পেছনে রেখে মনে জোর নিয়ে এসে কথা বলতে পারেন। মনে রাখতে হবে, আমি এ অভ্যাসকে আর বৃদ্ধি করব না।

নিজের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। যেকোনো কাজে গভীর মনোনিবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারটিও মাথায় রাখতে হবে। আলস্য জীবনযাপন বা অতিরিক্ত ঘুমের অভ্যাস বাদ দেওয়া দরকার। নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধ্যান বা ইয়োগা করলে এ ধরনের অভ্যাস পরিহার করার ক্ষমতা তৈরি হয়।

সবসময় তো আর নিজের প্রতি নিজের নিয়ন্ত্রণও থাকে না আবার এ অভ্যাসগুলো চর্চার সময় খেয়ালও থাকে না তাই কাছের মানুষদের জানিয়ে রাখতে হবে, যাতে তাঁরা থামিয়ে দেন বা মনে করিয়ে দেন। তখন আবার নিজেদের বিরক্তিও প্রকাশ করা যাবে না।

পরিবারের সদস্যদের ছোটবেলা থেকে কিছু অভ্যাস তৈরি করে দেওয়া উচিত। বড়দের সঙ্গে ভদ্রতার সঙ্গে বসা, কথা বলা, অন্যদের সম্মান দেখিয়ে আচরণ করাসহ বিভিন্ন মূল্যবোধ শেখাতে হবে। তাদের মধ্যে মুদ্রাদোষ থাকলে ভর্ৎসনা নয়, বারবার বলে সচেতন করে দিতে হবে।

মুদ্রাদোষ থেকে মুক্তি পেতে আরেকটি ব্যায়াম করা যেতে পারে। তা হলো যিনি পা নাড়ান কিংবা হাত দিয়ে নাক, কান বা মাথা চুলকাতে থাকেন, তিনি দিনের একটা সময় ধরে একটানা পা বা হাতের দিকে স্থিরভাবে তাকিয়ে থাকুন। মনোযোগ নিয়ে দেখুন আর ভাবতে থাকুন অভ্যাসগুলোর কথা। কিংবা হঠাৎ বেখেয়াল হতেই পা নাড়াচ্ছিলেন, মনে হওয়ার পর বন্ধ করে তাকিয়ে ভাবতে থাকুন পাঁচ মিনিট। ভাবার সময় আবার বেখেয়াল হয়ে যাবেন না।

মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে অবশ্যই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করাই ভালো। অনেক মুদ্রাদোষ থাকে, যা মানসিক দুর্বলতা, অস্থিরতা কিংবা মনের অন্যান্য রোগের অনুসর্গ হয়ে দাঁড়ায়। তাই হেলফেলা করা উচিত নয়। তবে সবার আগে নিজেকে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে এ ধরনের অভ্যাস বর্জনের প্রচেষ্টা অধিক জরুরি।

ব্যক্তির শারীরিক আচরণ এবং বহিঃপ্রকাশই তার ব্যক্তিত্বকে সবার কাছে তুলে ধরে।

শিখ্‌তী সানী
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ২৮, ২০০৮

Previous Post: « জরুরি রক্তের প্রয়োজনে
Next Post: সুস্থ থাকুক শরীরটা »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top