• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

শিশুদের সামনে কী করছেন কী বলছেন

শিশুদের সামনে কী করছেন কী বলছেন
November 18, 2020

শহরটা যেন এখন একটু বেশি চুপচাপ। সাতসকালে দুই বেণি বেঁধে, পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে হেঁটে যাওয়া শিশুদের চোখে পড়ে না। বিকেলবেলা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে শোনা যায় না তাদের কিচিরমিচির। স্কুলের ছোট্ট মাঠ, ক্লাসরুমগুলো খাঁ খাঁ করে। দুরন্ত শিশুরা যে সব ঘরে বন্দী।

পৃথিবীটা যেন এখন রূপকথায় পড়া সেই দৈত্যের রাজ্য। দৈত্যের ভয়ে শিশুরা সব ঘরে বন্দী। শিশুদের কাছে করোনাভাইরাস তো দৈত্যের মতোই। তাই তো ছোট্ট মাইসা বলে, ‘মা বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন। বাইরে তো করোনা দৈত্য আছে।’ মাইসার বোনের নামটা তুলতুল হলেও দারুণ সাহসী সে। পাশ থেকে বলে ওঠে, ‘এই দেখ স্যানিটাইজার। এটা দিয়ে দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়।’

এ তো গেল ঘরের বাইরের কথা। কিন্তু ঘরের ভেতরে কেমন আছে শিশুরা? ঘরবন্দী জগতে কীভাবে কাটছে তাদের দিন? ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা আরও বেশি করে জেনে যাচ্ছে বড়দের কথা। শিশুরা জেনে যায়, মা-বাবা কেন ঝগড়া করেন কিংবা বাবা রেগে গেলে মায়ের গায়ে হাত তোলেন। ছোট্ট ছেলে বা মেয়েটা জানতে পারে মায়ের হাতে টাকা নেই। কারণ, বাবা মাকে হাতখরচের টাকা দেন না। ছোট্ট শিশুটি এটাও শুনতে পায়, দাদা-দাদি সংসারে খুব বেশি অকেজো। সে জানতে পারে, মা নানাভাইকে টাকা পাঠালে বাবা ভীষণ রাগ করেন। সে শুনতে পায়, গৃহকর্মী কাজ কম করে। কিন্তু বেশি ভাত খায়।

ঢাকায় পায়রার খোপের মতো ফ্ল্যাটবাড়িতে এঘরের কথা কান না পাতলেও ওঘরে শোনা যায়। ফলে শিশুটি শুনে ফেলে চাচা বলছেন, নানি মাকে আদবকায়দা কিচ্ছু শেখাননি। তাই মা শুধু মুখে মুখে কথা বলেন।

সংসারের টুকরো টুকরো এসব জটিল ছবিই কিন্তু খুদে শিশুটির জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। যেমনটা হয়েছিল প্রথম শ্রেণির ছাত্রী রামিসার (ছদ্মনাম) বেলায়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে স্কুল বন্ধ রামিসার। রামিসাকে নিয়ে কয়েক মাস ধরেই ভীষণ উদ্বিগ্ন তার পরিবার। কাঁঠালবাগানের দুই রুমের ছোট্ট একটা বাড়িতে তারা থাকে। রামিসার সমস্যাটা তার মা আর দাদিকে নিয়ে। মাকে সে ভাবে রাক্ষসী। মায়ের রূপ ধরে নাকি রাক্ষসীটাই থাকে তার কাছে। আর দাদিকে তার মনে হয় ডাইনি। তিনি আসলে মানুষ না। মা আর দাদিকে রীতিমতো ভয় পায় রামিসা। প্রথমটা সবাই ভেবেছিল এ ছোট্ট রামিসার কল্পনা। শিশুরা তো কত কিছুই ভাবে, বলে। কিন্তু পরিস্থিতি গুরুতর হলো। রামিসা ঠিকমতো খেতে পারে না। ঘুমাতেও পারে না। রামিসাকে নেওয়া হলো মনোবিদের কাছে। আসলে কী হয়েছে রামিসার? মা আর দাদির মধ্যে মতবিরোধ চলে প্রায়ই। করোনার সংক্রমণের সময় কলেজশিক্ষক মা অনলাইনে ক্লাস নেন। বাসায় গৃহকর্মী নেই। সংসারের খুঁটিনাটি নিয়ে মা আর দাদির বিরোধ চরমে ওঠে। রাগের মাথায় মা রামিসাকে বলেছেন তার দাদি ডাইনি। আর দাদি বলেছেন মা রাক্ষসী। রামিসা মা আর দাদি দুজনকেই ভালোবাসে। দুজনের এত দ্বন্দ্বে সে অসহায় বোধ করতে থাকে। যার ছাপ পড়েছে তার ছোট্ট মনে। সে চলে গেছে ট্রমায়। এখন তাকে মনোবিদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

সংসারের এসব জটিলতা থেকে শিশুদের হয়তো পুরোপুরি বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু আরেকটু সতর্কতা, মনোযোগ এসবের মধ্যেও শিশুটিকে ভালো রাখতে পারে। মা পাখি ছোট্ট ছানাকে আগলে রেখে যেভাবে ঝড় থেকে বাঁচায়, পরিবারের বড় সদস্যরাও শিশুটিকে বাঁচাতে পারেন সেভাবে। আর এ ক্ষেত্রে বড় একটা ভূমিকা রয়েছে মা-বাবার। রেগে গেলে মাথার ঠিক থাকে না অনেকের। সে জন্যই কথায় আছে ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।’ আবার এটাও বলা হয়, রাগ প্রকাশ করতে পারলে মনটাও হালকা হয়। তাই রাগের প্রকাশটাও জরুরি। শিশুরা শুনতে পাবে এ ভেবে পরিবারের বড়দের পক্ষে রাগ গিলে থাকাটাও কঠিন।

এই পরিস্থিতি থেকে শিশুকে নিয়ে নচিকেতার মতো ‘চল যাব তোকে নিয়ে’ গান গেয়ে পালানোও সম্ভব না। তাই শিশুকে বোঝাতে হবে তার মতো করেই।

রূপকথার রাজা-রানির মতো বাস্তবের মা-বাবা সারা জীবন সুখে–শান্তিতে সংসার করবেন না। এই সত্যটা শিশুদের তাদের মতো করে বোঝাতে পারলে সংকট কিছুটা কমানো সম্ভব। শিশুদের বোঝানো যেতে পারে তার যেমন বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া হয়, মা-বাবারও হয়। বন্ধুর সঙ্গে আড়ির পর যেমন ভাব হয়, তেমনি মা-বাবারও হয়। বেশি পড়া দিলে শিশুর যেমন শিক্ষকের ওপর রাগ হয়, তেমনি মায়েরও দাদির ওপর বা দাদিরও মায়ের ওপর রাগ হয়। আবার তা মিটেও যায়। ঝগড়ার পরে মা-বাবা বা পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো সময়গুলোতে শিশুদের বেশি যুক্ত করতে পারেন। বলতে পারেন, দেখো আমাদের ঝগড়া মিটে গেছে। তাহলে হয়তো শিশুর সংবেদনশীল মনে চাপ কিছু কম হতে পারে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজির আহম্মদও এতে কিছুটা একমত পোষণ করেন। তবে তিনি বলছেন, সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো কঠোরভাবে শিশুটিকে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে দূরে রাখা। প্রয়োজনে মা-বাবা বা পরিবারের সদস্যদের রাগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল জানতে হবে। এ সময়ের জীবনযাত্রায় এটা খুব প্রয়োজন। রাগ বা ঝগড়ার সময় আমাদের আরও একটি ভয়াবহ প্রবণতার কথা উল্লেখ করলেন এই মনোবিদ। তিনি বলেন, রাগের সময় অনেকেই আমরা শিশুটিকে নিজেদের দলে টানতে চেষ্টা করি। মা বলেন, বাবা ভালো না। তার কথা শুনবে না। অথবা বাবা বলেন, মায়ের থেকে আমি বেশি ভালো। আমার কথা শুনবে। এতে শিশুদের মধ্যে স্থায়ী একধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় (যেমনটা ঘটেছিল রামিসার ক্ষেত্রে)। ঝগড়া মিটে গেলে বড়দের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেও শিশুর মনে থেকে যায় স্থায়ী ছাপ। বিশেষ করে ঝগড়ার সময় শব্দ নির্বাচন ও মুখভঙ্গির ব্যাপারে সতর্ক থাকার কথা বললেন এই মনোবিদ। খুব বেশি আক্রমণাত্মক শব্দ ও মুখভঙ্গি শিশুকে ভয় পাইয়ে দিতে পারে।

শিশুর সামনে মিথ্যা বলা যাবে না। এতে সে–ও শিখে নেবে ‘ঘরে বসে বাইরে থাকার কথা বলা অপরাধ না!’ বড়রা কথা বলার সময় শিশুদের সামনে কী বলছেন, সেটা খেয়াল রাখা জরুরি।

শুভা জিনিয়া চৌধুরী
প্রথম আলো, ১৮ নভেম্বর ২০২০

Previous Post: « ফুসফুসের ক্যানসার ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য সেবন করবেন না
Next Post: শরীরের দুর্গন্ধ কমানোর সহজ উপায় »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top