ফারহানা মোবিন
প্রতিটি মানুষের জ্ন ছোট্ট একটা ভ্রূণ থেকে। আর ভ্রূণ তৈরি হয় নারী-পুরুষের মিলনের মাধ্যমে। মিলনের সময় পুরুষের শুক্রাণু আর নারীর ডিম্বাণু মিলিত হয়। মিলিত হওয়ার কিছুদিন পর ভ্রূণ তৈরি হয়। ডিম্বাণু আসে ডিম্বাশয় থেকে। ডিম্বাশয় নারীর জননতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
পুরুষের শরীরে কোনো ডিম্বাশয় থাকে না। ডিম্বাশয় মেয়েদের তলপেটের নিচের দিকে এবং জরায়ুর দুই পাশে (তলপেটের ভেতরের দিকে) থাকে। ডিম্বাশয় দেখা যায় না। এটি ছোট একটি মাংসল অঙ্গ। সংখ্যায় এক জোড়া। দেহের বাঁ ও ডান দিকে এদের অবস্থান।
ডিম্বাশয়ের দীর্ঘ্য তিন সে·মি· ও প্রস্থ দুই সে·মি· এবং পুরুত্ব এক সে·মি·। মাংসল থলেটা ধূসর গোলাপি ও ডিম্বাকৃতির। ডিম্বাশয়কে ইংরেজিতে বলে ওভারি। গর্ভাবস্থার আগে ডিম্বাশয়ের ওপরের ত্বক মসৃণ থাকে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় ডিম্বাশয়ে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন দেখা যায়। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে মেনোপজ বা ঋতু বন্ধ হওয়া পর্যন্ত ডিম্বাশয়ে পরিবর্তন চলতেই থাকে (ওপরের ত্বকে)।
দুটো ডিম্বাশয়ের সঙ্গে লাগানো থাকে ওভারিয়ান টিউব বা ইউটেরাইন টিউব। মিলনের সময় এই নালির মাধ্যমে ডিম্ব ডিম্বাশয় থেকে জরায়ুতে আসে। জরায়ুকে বলা হয় ভ্রূণ সৃষ্টির কারখানা। ডিম্ব হচ্ছে সেই কারখানার কাঁচামাল। বয়ঃসন্ধিকালের আগে ওভারি লালচে থাকে। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকালের পরে তা ধূসর হয়ে যায়। প্রথম সন্তান জ্নদানের পর ডিম্বাশয় আর কখনো আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। জন্মগত ত্রুটি হিসেবে ডিম্বাশয় না থাকলে ঋতুস্রাব হবে না, গর্ভধারণও হবে না কিন্তু একজন নারী বেঁচে থাকবে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্থলন হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলে ওভুলেশন।
ডিম্বাশয় থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন নিঃসৃত হয়। এগুলো হলো ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন, এন্ড্রোজেন, রিলাক্সিন।
ইস্ট্রোজেনের কাজ
— ডিম্বাশয়ে ফলিকিউলার গ্রোথে (গর্ভাবস্থায় যা ভীষণ জরুরি) সাহায্য করে এবং গর্ভস্থ শিশুর
ডিম্বাশয় গঠনে ভূমিকা রাখে।
— গর্ভস্থ শিশুর জননতন্ত্রের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।
— ইউটেরাইন টিউবের তৎপরতা বাড়ায়।
— গর্ভাবস্থা ও সন্তান জ্নের সময় জরায়ুকে আকারে বড় করে এবং বুকের অভ্যন্তরীণ গঠনে সাহায্য
করে।
— ঋতুস্রাব তৈরি করে এবং রক্ত জমাট বাঁধায়।
— মেয়েদের থাই, বুক, নিতম্বে চর্বি জমায় এবং সারা শরীরে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ায়।
— ত্বক নরম ও মসৃণ করে।
প্রজেস্টেরনের কাজ
— শিশুর জন্য বুকের দুধ তৈরি করে।
— দেহের সব জননতন্ত্রের ওপর ভূমিকা রাখে এবং গর্ভনিরোধক হিসেবে কাজ করে।
— ভ্রূণের পুষ্টি জোগায় এবং শরীরের কোষে সামান্য পরিমাণ লবণ ও পানি জমায়।
— যোনিতে নিঃসরণে ভূমিকা রাখে।
ডিম্বাশয়ের যত্নে যা করবেন
— গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না।
— ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া জন্মনিরোধক ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে খাবেন না। দীর্ঘদিন ধরে গর্ভনিরোধক বড়ি সেবন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
— ঋতুস্রাবের সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকুন। ঋতুস্রাব হতে বিলম্ব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
— প্রসবের পর দীর্ঘ সময় ধরে নিচে বসে থাকবেন না।
— মোটা হওয়ার আশায় স্বেচ্ছায় স্টেরয়েড বা হরমোন-জাতীয় ওষুধ খাবেন না।
— অপরিণত বয়সে বিয়ে ও সন্তান জ্নদান থেকে বিরত থাকুন।
— জ্ননিরোধক বড়ির প্যাকেটে ব্যবহারের নিয়মকানুন দেওয়া থাকে। তা সঠিকভাবে মেনে চলুন।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৬, ২০০৮
আমার wife এর বয়স ১৭ বছর।তার একটা সমস্যা হল প্রায় সাদা স্রাব হয়।অনেক ডাক্তার দেখানো হইছে কিন্তু তেমন কোন কাজ হচ্ছে না।এটা কি বংশগত হয়ে থাকে?ওর আপন দুই কাকাত বোনের এই সমস্যা ছিল কিন্তু ওদেরটা ভাল হয়ে গেছে,তারটা ভাল হচ্ছে না। এখন কি করা যেতে পারে বিস্তারিত ভাবে জানালে ভাল হত?এর কোন স্থায়ী চিকিস্যা আছে?(ওর পিরিওড নিয়মিত হয়)
আপনার নিজের কোনো প্রকার ইনফেকশন আছে কিনা সেটাও পরীক্ষা করে নিন। অনেক সময় স্বামীদের কাছ থেকেও এ ধরনের সমস্যা সংক্রমিত হয়।
আপনি এই লেখাটি পড়ে নিন।
না আমার পক্ষ থেকে কোন সমস্যা নেই।
আপনার দিক থেকে সমস্যা না হলে আপনার স্ত্রীর দিক থেকে দেখা যাক–
আপনি বলেছেন “প্রায় হয়”। এটা ঠিক কখন কখন বা কতদিন পর পর? জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন?
এসময় কি চুলকানি হয়? দুর্গন্ধ হয়? রক্ত যায়? তলপেটে ব্যথা হয়? জ্বর বা অন্যান্য কোনো উপসর্গ কি দেখা দেয়?