• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

সিএডিপিআর – হৃদরোগ প্রতিরোধের নতুন উপায়

August 3, 2008

ডা· গোবিন্দ চন্দ্র দাস
সিনিয়র কনসালট্যান্ট
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আবেগের আগ্রাসন, কাজের বাড়তি চাপ প্রভৃতি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। জীবনে ক্রমাগত আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যাওয়া, কাজে-কর্মে তাড়াহুড়ো, আধুনিক জীবনযাত্রায় নিত্যদিনের দুর্ভাবনা সরাসরি আমাদের শরীরের রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়ায় (কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম) প্রভাব ফেলে। হৃদ্‌যন্ত্রকে যদি ঘোড়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়, তবে মনকে বলতে হবে এর চালক বা অশ্বারোহী।

জীবনের দৌড়ে গতি বাড়ালে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ে মনে, আর এর প্রভাব পড়ে হৃদ্‌যন্ত্রে। একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছে মানুষ-সময়ের প্রয়োজনেই। এ জন্য মূল্যও দিতে হচ্ছে-হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

বাংলাদেশে হৃদরোগীর সংখ্যা প্রচুর। স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানে যে করোনারি ধমনিতে কোলেস্টেরল ও মেদ জমার কারণেই স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়, যেটাকে ‘ব্লকেজ’ বলা হয়।

খাবারের মাধ্যমে কোলেস্টেরল ও চর্বি গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হলে এটা একদিকে যেমন নতুন ব্লকেজের সৃষ্টি রোধ করবে, অন্যদিকে তেমনি ধমনিতে জমে থাকা মেদকেও অপসারণ করবে। চিন্তার বিষয় হলো, হৃদরোগের চিকিৎসায় আধুনিক নিরাময় প্রযুক্তি, যেমন বাইপাস সার্জারি বা এনজিওপ্লাস্টি বিফলে যায় শুধু নতুন নতুন ব্লকেজ সৃষ্টি ও অপারেশনের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেই।

এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি প্রসঙ্গ
এনজিওপ্লাস্টির স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হলো, এটা স্বল্পতম সময় কার্যকর থাকে। এটা বেশ ব্যয়বহুল। আশির দশকে বেলুন এনজিওপ্লাস্টির চিকিৎসা শুরু হলে হৃদরোগীরা এ পদ্ধতির সাময়িক সাফল্যে ভরসা পেয়েছিল। হৃদরোগ-বিশেষজ্ঞরাও প্রতিশ্রুতি দিতেন এই বলে যে একবার এনজিওপ্লাস্টি করা হলে সারা জীবনে আর এ রোগ নিয়ে রোগীকে ভাবতে হবে না।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, ধমনি থেকে বেলুন অপসারণ করা হলে স্থিতিস্থাপকতার কারণেই আবার আগের ব্লকেজ ফিরে আসে। এরপর এনজিওপ্লাস্টির ব্যর্থতা ঢাকার জন্য স্প্রিং সংযোজন শুরু হয়। যদিও পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কয়েক বছরের মধ্যেই পুনরায় রোগীর ধমনিতে নতুন করে ব্লকেজ দেখা দিতে শুরু করে।

করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফটিংকে সংক্ষেপে বাইপাস সার্জারি বলা হয়। করোনারি ধমনিতে দ্বিতীয় টিউব সংযোজনের অন্য নামই বাইপাস সার্জারি (বাইপাস সড়ক যেমন, সেটা কিন্তু আসল পথ নয়)। এ পদ্ধতিতে ব্লকেজ সরানো হয় না, একটি কৃত্রিম সমান্তরাল পথ করে দেওয়া হয়, যাতে অধিক রক্ত প্রবেশ করতে পারে হৃৎপিণ্ডে।
আসলে এটা স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহকে অনেকটা অধিকারবঞ্চিতই রাখে। আমাদের শরীরের যেকোনো অস্ত্রোপচারের তুলনায় এ বাইপাস সার্জারি অনেক জটিল এবং একই সঙ্গে এটি অনেক অঙ্গের ক্ষতি করে।

সত্যি বলতে, এ অপারেশনের সময় হৃদ্‌যন্ত্রের কাজ বন্ধ করে দিয়ে কৃত্রিমভাবে লাং বাইপাস মেশিনের মাধ্যমে রক্তপ্রবাহ সচল রাখা হয়। একই সময়ে কৃত্রিম নালি সংযোজনের জন্য পায়ে বা হাতেও অপারেশন করা হয়; ফলে কিছু স্বাভাবিক নালি কাটা পড়ে, নয় তো অপসারণ করতে হয়।

গবেষণা অবশ্য থেমে নেই। হৃদ্‌যন্ত্রের ধমনিতে ব্লকেজ সৃষ্টির কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে। দেখা গেছে, ব্লকেজ যে কারণে হয়, সেই সমস্যার সমাধান না করেই অস্ত্রোপচারের চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। এ সূত্র ধরেই নতুন ধরনের চিকিৎসার পথ খোঁজা হতে থাকে। গবেষণা করেই হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ সাম্প্রতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সিএডিপিআর কী
শুধু নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন আর কিছু নিয়ম মানলেই হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটাকেই বলা হচ্ছে করোনারি আর্টারি ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড রিগ্রেশন প্রোগ্রাম, সংক্ষেপে সিএডিপিআর। কোনো ওষুধ গ্রহণ ছাড়াই কেবল খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ এনে হৃদরোগ সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ও নিরাময় করা সম্ভব। সিএডিপিআরের মধ্যে রয়েছে নিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগের ঝুঁকি সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ, খাদ্য গ্রহণ বিষয়ক পরামর্শ, ধূমপান ত্যাগ, শরীরচর্চা, যোগ ব্যায়াম, প্রাণায়াম, মেডিটেশন।

এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বহুসংখ্যক হৃদরোগী ঝুঁকি এড়িয়ে সুন্দর জীবন যাপন করছে। তারা প্রথমে হৃদরোগের প্রধান প্রধান ঝুঁকি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে হৃদ্‌যন্ত্রের ধমনিতে কোলেস্টেরল কমানো ও চর্বি জমা বন্ধে ভূমিকা রেখেছে।

এ নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিতে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধকে একেবারে বাদ দেওয়া হয় না, ওষুধ সেবনও চলতে থাকে। তবে ধীরে ধীরে রোগীর অবস্থার উন্নতি হলে তখন আর ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয় না। এ চিকিৎসা পদ্ধতিতে খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনা খুব জরুরি।

সেই শিক্ষাই দেওয়া হয় এ পদ্ধতিতে; আরও শেখানো হয় যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশন। সামগ্রিক চাপ মোকাবিলা করার বিশেষ প্রশিক্ষণও এর অন্তর্ভুক্ত। এ জন্য পাঁচ দিনের একটি কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে। এটা বি্নয়কর যে মাত্র কয়েক সপ্তাহ খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন এনে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যায়াম করে, চাপমুক্তির কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে এবং মেডিটেশন চর্চা করে বুকের ব্যথা সম্পূর্ণ দূর করা সম্ভব। দু-এক বছরের চেষ্টায় ধমনির ব্লকেজও অপসৃত হয়ে থাকে।

সিএডিপিআর কাদের জন্য
শিগগিরই যারা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারির পরিকল্পনা করেছে, যারা ইতিমধ্যে এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি করেছে, এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারির পর যাদের আবার ব্লকেজ ধরা পড়েছে, যারা এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারির জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছে, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে যারা, খুবই মুটিয়ে গেছে যারা, যাদের হৃদরোগের দীর্ঘ পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, যাদের একবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে, যাদের রক্তে অস্বাভাবিক মাত্রায় কোলেস্টেরল রয়েছে, ডায়াবেটিক রোগী, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি যাদের, কর্মজীবী যাদের অত্যন্ত চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়।
একবার কষ্ট করে জীবনধারায় কিছু নিয়ন্ত্রণ ও পরিবর্তনের ধারায় আসতে পারলে পরে আর সেটা কষ্টসাধ্য মনে হবে না।

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০২, ২০০৮

Previous Post: « ইনসুলিনের সাতকাহন
Next Post: ডায়াবেটিস নির্ণয়ে এইচবিএ১সি »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top