• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

আমরা কীভাবে কথা বলি

August 3, 2008

অধ্যাপক ডা· এম আলমগীর চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, নাক, কান ও গলা বিভাগ
মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটাল, উত্তরা, ঢাকা

গলায় অবস্থিত ল্যারিংস বা শব্দযন্ত্রে দুটি ভোকাল কর্ড বা কণ্ঠনালি থাকে। এই নালি দুটির কম্পনের মাধ্যমে শব্দ তৈরি হয়। নিঃশ্বাসের সময় ফুসফুস থেকে প্রবাহিত বাতাস কণ্ঠনালিতে কম্পনের সৃষ্টি করে। কথা বলা বা গান গাওয়ার সময় এই কম্পনের পরিমাণ প্রতি সেকেন্ডে ১০০ থেকে এক হাজার বার। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে এক মিলিয়ন বার কণ্ঠনালি দুটির সংস্পর্শ হয়। অতএব চিন্তা করুন আমাদের কণ্ঠনালির ওপর আমরা কতটুকু নির্ভরশীল-ঘরে-বাইরে, সব খানে সব সময়। তাই আমাদের কণ্ঠনালি তথা কণ্ঠকে সুস্থ রাখা খুবই জরুরি।

কীভাবে কণ্ঠকে সুস্থ ও সুন্দর রাখা যায়
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন, কমপক্ষে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। পানি কণ্ঠনালিকে আর্দ্র রাখে এবং আর্দ্র কণ্ঠনালি শুষ্ক কণ্ঠনালির চেয়ে বেশি ব্যবহার করা যায়। খেলা শুরুর আগে যেমন প্রস্তুতি দরকার, তেমনি দীর্ঘ বক্তৃতার আগে কণ্ঠনালির একইভাবে হালকা ব্যায়াম করা উচিত। প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কাজে নামা ঠিক নয়। অনুশীলন করলে কণ্ঠের মান ও উপস্থাপনা সুন্দর হয়। কথা বলা ও গান গাওয়ার মাঝখানে দীর্ঘ শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে কথা বলা, গান গাওয়াকে সুন্দর করে এবং কণ্ঠনালির অবসাদ হয় না। বক্তব্য বা উপস্থাপনা বা বড় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় মাইক্রোফোন ব্যবহার করা ভালো। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় কণ্ঠনালিকে বিশ্রাম দেওয়া উচিত, যা কণ্ঠনালির অবসাদ দূর করে এবং শক্তি ফিরিয়ে দেয়। নিজের কণ্ঠকে শুনুন এবং যদি কোনো রকমের উপসর্গ থাকে বা পরিবর্তন লক্ষ করেন, তাহলে যথাযথ যত্ন নিন। যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্বর পরিবর্তন লক্ষণীয় হয় তাহলে নাক, কান ও গলাবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। এমন কিছু করবেন না, যা কণ্ঠনালির ক্ষতি হয়।

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান কণ্ঠনালির ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া ধূমপান কণ্ঠনালির প্রদাহ করে। জোরে জোরে বা পরিবর্তিত স্বরে কথা বলা উচিত নয়। জোরে কথা বললে বা কণ্ঠনালির অপব্যবহার করলে কণ্ঠনালিতে সূক্ষ্ম আঘাত হতে পারে। দূর থেকে কাউকে ডাকতে হলে হাততালি বা শিস বা হাত নেড়ে অথবা লাইটের মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। বড় খেলা উপভোগ করার সময় পছন্দের দলকে সাপোর্ট করার জন্য জোরে চিৎকার না করে পতাকা ওড়ান বা ব্যানার লেখেন।এমন কিছু খাবেন না, যাতে এসিডিটি হতে পারে। তাই মাথা উঁচু করে ঘুমাবেন, টাইট কাপড় পরে ঘুমানো যাবে না, হালকা ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করে ঘুমাবেন। খাবারের সঙ্গে সঙ্গে ঘুমানো বা ক্যাফেইনযুক্ত খাবার গ্রহণ করা বাদ দিতে হবে। দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে কণ্ঠনালিতে চাপ পড়ে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন। মোবাইল ফোনে কথা বলতে সাবধানতা অবলম্বন করুন। গাড়িতে বা ট্রেনে ভ্রমণের সময় কণ্ঠনালিকে বিশ্রাম দিন। দৈনন্দিন খাবারের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না। মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত কথা বললে কণ্ঠনালিতে চাপ পড়ে। চিন্তা করুন, ফোন কলটি আপনার প্রয়োজনীয় কি না। শব্দপূর্ণ পরিবেশে মোবাইল ফোনে উচ্চ স্বরে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। এতে কণ্ঠনালির বিশ্রাম হবে।

কণ্ঠনালির সমস্যার কারণ
যদি ঘন ঘন কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয় বা দীর্ঘ ১৫ দিন বা দুই সপ্তাহে ভালো হচ্ছে না তবে নাক, কান ও গলাবিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। বিভিন্ন কারণে কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হতে পারে। কণ্ঠস্বর বা কণ্ঠনালির বিভিন্ন সমস্যা

নিচে তুলে ধরা হলো-

কণ্ঠনালির তীব্র প্রদাহ
কণ্ঠস্বর পরিবর্তনের প্রধান কারণ হলো কণ্ঠনালির তীব্র প্রদাহ। সাধারণত ভাইরাসজনিত কারণে প্রদাহ হয়, কণ্ঠনালি ফুলে যায়, যাতে কণ্ঠনালির কম্পনের সমস্যা সৃষ্টি করে। ফলে স্বর পরিবর্তন হয়। প্রচুর পানি খেলে, কণ্ঠনালিকে বিশ্রাম দিলে এটা ভালো হয়ে যায়। তীব্র প্রদাহ অবস্থায় যদি জোরে কথা বলেন তা কণ্ঠনালির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তবে যেহেতু তীব্র কণ্ঠনালির প্রদাহ ভাইরাসজনিত তাই এতে অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না। যদি ব্যাকটেরিয়াজনিত প্রদাহ হয় তবে এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হয়, যার বিশেষ চিকিৎসা দরকার।

দীর্ঘমেয়াদি ল্যারিনজাইটিস
পাকস্থলীর এসিড রিফলাক্সের জন্য কণ্ঠনালির দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ হতে পারে। ধূমপান, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির জন্য ইনহেলার ব্যবহার বা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের দীর্ঘমেয়াদি ল্যারিনজাইটিস হতে পারে।

কণ্ঠস্বরের অতি ব্যবহার
কথা বলার সময় কণ্ঠনালির সঙ্গে আশপাশে অবস্থিত মাংসপেশিরও সাহায্য লাগে। কণ্ঠনালিকে সঠিক ও নিয়মের বাইরে ব্যবহার করা, কঠিন উচ্চ স্বরে, অতিরিক্ত, দীর্ঘমেয়াদি বা পরিবর্তিত স্বরে কথা বললে কণ্ঠনালির প্রদাহ দেখা যায়, যা ভারী জিনিস ঠিকভাবে না ওঠানোর জন্য পিঠে ব্যথা হওয়ার সমতুল্য। গলা ও শব্দযন্ত্রের মাংসপেশির সংকোচন এবং কথা বলার সময় ঠিকভাবে শ্বাস না নিলে শ্বাসযন্ত্রের অবসাদ হয়, কথা বলতে কষ্ট হয় এবং কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে ও কণ্ঠনালিতে পলিপ বা নডিউল এমনকি রক্তক্ষরণও হতে পারে।

কণ্ঠনালির অপব্যবহারের কারণ
কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে জোরে কথা বলা। অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা। ঘাড় ও কানে ফোন চেপে ধরে কথা বলায় ঘাড় ও শব্দযন্ত্রের মাংসপেশিতে টান লাগে। উচ্চ স্বরে বা চিৎকার করে কথা বলা, জনসমাবেশে বা বড় লেকচার গ্যালারিতে মাইক ছাড়াই জোরে কথা বলা প্রভৃতি।

কম ক্ষতিকারক কণ্ঠনালির রোগ
দীর্ঘমেয়াদি কণ্ঠনালির অপব্যবহারে যে ক্ষতি হয় পরবর্তী সময়ে তা কণ্ঠনালির কম্পনের মাত্রার ওপর প্রভাব ফেলে এবং কণ্ঠনালির পলিপ, নডিউল বা সিস্ট হতে পারে। নডিউল সাধারণত কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে বেশি হয়। রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, আইনজীবী, অধিক সন্তানের জননী, মসজিদের ইমাম ও হকারদের মধ্যে এসব রোগ হতে পারে। চিকিৎসা হলো অপারেশন ও ভয়েস থেরাপি।

কণ্ঠনালিতে রক্তক্ষরণ
জোরে চিৎকার করলে বা গলায় বেশি শক্তি দিয়ে কথা বললে বা গলায় আঘাত পেলে হঠাৎ করে কথা বন্ধ হতে পারে। কণ্ঠনালির সূক্ষ্ম রক্তনালি ছিঁড়ে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। এ অবস্থায় কথা বলা বন্ধ রাখতে হবে যত দিন জমাট রক্ত মিলিয়ে না যায়।

কণ্ঠনালির প্যারালাইসিস বা দুর্বলতা
কণ্ঠনালি কিংবা শব্দযন্ত্রের স্মায়ুর দুর্বলতা বা কোনো সমস্যার জন্য কণ্ঠনালির পরিবর্তন হতে পারে। ভাইরাসজনিত প্রদাহের কারণে স্মায়ু দুর্বল হয়। সাধারণত এক দিকের স্মায়ুই দুর্বল হয়, দুই দিকের স্মায়ু একই সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। এক দিকের স্মায়ুর দুর্বলতার কারণ হচ্ছে ভাইরাস সংক্রমণ, টিউমার, ক্যান্সার ও থাইরয়েড অপারেশন। কণ্ঠনালির দুর্বলতার জন্য ফ্যাসফ্যাসে আওয়াজ হয় এবং এটি নিঃশ্বাসের সঙ্গে জড়িত। কয়েক মাসের মধ্যে একদিকের দুর্বলতা ভালো হয়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কণ্ঠনালির দুর্বলতা ভালো হয় না, তখন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

কণ্ঠনালির ক্যান্সার
যেকোনো ক্যান্সারের মতোই গলার ক্যান্সার বা কণ্ঠনালির ক্যান্সারকেও মোটেই অবহেলা করা উচিত নয়। গলার স্বর পরিবর্তন ১৫ দিনের মধ্যে ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কণ্ঠনালির ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করে চিকিৎসা নিলে তা পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। আর এ চিকিৎসা আমাদের দেশেই রয়েছে।

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১৬, ২০০৮

Previous Post: « একজন সাংবাদিকের ডায়াবেটিক জীবন
Next Post: হেপাটাইটিস প্রতিরোধে লিভার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top