• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

বহুদিন পর ভোট দিলেন এই নারীরা

January 14, 2009

বহু যুগ পরে কালিকাপুরের নারীরা গেলেন ভোটকেন্দ্রে

স্বপ্ন এবার সত্যি হলো কালিকাপুর নারীদের। দীর্ঘ চার যুগেরও বেশি সময়ের পর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দিয়েছেন মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের নারী ভোটাররা। এই ইউনিয়নের সাত হাজার নারী ভোটারের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ভোট দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের স্বপ্নের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য সকাল থেকেই সব কুসংস্কার, ফতোয়াবাজি, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বাধা ভেঙে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আসতে থাকেন। গত ২৪ ডিসেম্বর নারীমঞ্চে ‘কোনো নারীই সেখানে ভোটকেন্দ্রে যায় না’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর এলাকার সচেতন নারীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আরও বেশি উৎসাহিত হন। তারই ধারাবাহিকতায় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কালিকাপুরের নারীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেন।
২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন বেলা ১১টার দিকে চরনাচনা দাখিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নারীরা ভোট দিতে সারিতে দাঁড়িয়েছেন। ভোট দিতে অপেক্ষায় থাকা আলেয়া বেগম, আয়াতুন্নেছা, আকলিমা ও লাইজু বেগমসহ উপস্থিত সবাই এই প্রথমবার ভোট দিচ্ছেন বলে জানালেন। তাঁরা বলেন, ‘এবার আর হেগো (স্বামীর) কথায় ঘরের কোনায় বইস্যা থাকুম না। আমাগো অধিকারের জন্য এবার আমরা ভোট দিমু। আমাগো কাছে যারে ভালো লাগবো, তারেই আমরা ভোট দিমু।’
৭০ বছরের বৃদ্ধা করিমুন্নেছা বলেন, ‘খুউব মজা লাগতাছে। আইজকাল কোনো কাজ করলেই জাইত (জাত) যায় না। দুনিয়াতে কী রীতি চলে দেহেনই তো।’
গৃহবধূ আমেনা বেগম বলেন, ‘ষাইট-সত্তুর বছর ধইর‌্যা এই ইউনিয়নের মহিলারা ভোট দেয় না। এইবার আমরা চরনাচনা গ্রামের সব মহিলা ভোট দিতাছি।’
দুপুর ১২টার দিকে কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে ভোটারদের সারিতে পুরুষের চেয়ে নারীদের ভিড় বেশি। সবার মধ্যে উৎসবের আমেজ। ভোট দেওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও অনেক বয়োবৃদ্ধ ভোট দিতে এসেছেন। তাঁদের অনেকেই নিয়মকানুন জানেন না।
মধ্য হোসনাবাদ ভোটকেন্দ্রের একটি দলের নির্বাচনী এজেন্ট সালমা খানম নামের এক কলেজছাত্রী বলেন, ‘সকাল থেকে অল্প কিছু নারী ভোট দিয়েছি। দুপুরের দিকে নারী ভোট বাড়তে থাকে। আমাদের এই এলাকায় রক্ষণশীল পরিবারের পুরুষদের বাধার কারণে নারীরা ভোট দিতে পারে না। তবে এবার সেই বাধা ভেঙে গেছে।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের (মাদারীপুর-৩ সদর) চারদলীয় ঐক্যজোট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী হেলেন জেরিন খান কালিকাপুরের নারীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারায় তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবে, কিন্তু আমি আসল জয় পেয়ে গেছি। আমার নির্বাচনী প্রতীকে ভোট না দিক, তারা যে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটকেন্দ্রে গেছে, এটাই আমার জয়লাভের সমান। আমি চাই প্রতিটি নির্বাচনে তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক।’
ভোট প্রদানে নারীদের উৎসাহ ও স্বাগত জানাতে মাদারীপুর থেকে ‘বিশ্লেষণ সামাজিক আন্দোলন’ নামের একটি বেসরকারি সংগঠনের কর্মীরা এসেছেন। বিশ্লেষণ সামাজিক আন্দোলনের সদস্য আঞ্জুমান আরা জুলিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ চার যুগেরও বেশি সময় ধরে এই ইউনিয়নের নারীরা অজ্ঞাত কারণে ভোট প্রদান করেন না। তাই এবারের ভোট প্রদানে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নারীদের স্বাগত জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিপূর্বে এই ইউনিয়নের নারীরা কোনো দিন ভোট দেননি। তাই জানেন না কীভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হয়। আমরা তাঁদের সহযোগিতা করেছি।’
সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম বলেন, এই ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় এমএমসির উঠান-বৈঠক, প্রচার-প্রচারণার কারণে দীর্ঘ ৬০ বছরেরও বেশি সময় পর এই প্রথমবার নারীরা ভোট প্রদান করছেন ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ নিয়ে। নারী ভোটারদের সারি পুরুষদের সারির চেয়ে বড় দেখে বোঝা যায়, নারীরা ভোট প্রদানে কেমন উৎসাহী। তিনি আরও বলেন, অনেক বৃদ্ধা নারী জীবনে কোনো দিন ভোট দেননি। এ ছাড়া অন্যরাও জানেন না কীভাবে ভোট দিতে হয়। তাই এই ইউনিয়নের কিছু ভোট নষ্ট হয়ে যাবে। ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত মাদারীপুর পুলিশের এএসআই শ্যামল কুমার জানান, নারীরা জানে না কীভাবে ভোট দিতে হয়। তাই নারীদের সারিতে ভিড় বেশি হয়েছে। আর নারীদের প্রখর রোদের মধ্যে সারিতে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হয়েছে।
কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এজাজুর রহমান আকন বলেন, ‘বিগত সংসদ নির্বাচনে আমি বুঝিয়ে-সুঝিয়ে উৎসাহিত করে আমার এলাকার প্রায় ১০০ নারীকে ভোট প্রদানে উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু সেই কারণে ইউপি নির্বাচনের সময় আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এলাকার হাজার হাজার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। এবার খুশির কথা হলো যে প্রথমবারেই শতকরা ৭০ ভাগেরও বেশি নারী ভোট প্রদান করেছেন। তবে ইউনিয়নের রক্ষণশীল এলাকা মধ্য হোসনাবাদ ভোটকেন্দ্রে পুরুষদের বাধার কারণে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নারী ভোট প্রদান করেছেন।’
কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বাদল চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, আমি জেনেছি, এই ইউনিয়নের নারী ভোটাররা এই প্রথমই আনন্দ-উৎসবে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। যেহেতু তাঁরা আগে ভোট দেননি, সেহেতু তাঁদের ভোট দিতে একটু সমস্যা হচ্ছে। আমরা যারা নির্বাচনের দায়িত্বে আছি, তারা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছি।’
কালিকাপুর ইউনিয়নে দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে নারীদের ভোট প্রদানে উদ্বুদ্ধ করে আসছে ম্যাসলাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি) নামের একটি বেসরকারি সংগঠন। তাদের প্রতিনিধি মনে করেন এ সাফল্যসবার।
উল্লেখ্য, মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এর মধ্যে সাত হাজারের মতো নারী ভোটার। ইতিপূর্বে ভোটার তালিকায় নারীদের নাম অন্তর্ভুক্ত হলেও নারীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি।

জহিরুল ইসলাম খান ও বাদল খান, মাদারীপুর থেকে ফিরে
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৪, ২০০৮

Previous Post: « ভোট দিতে এবার নারীদের স্বতঃস্কূর্ত অংশগ্রহণ
Next Post: New hope for Bangladesh »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top