• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

লারস লেইয়নবরি – স্বাধীনতার সুইডিশ বন্ধু

December 7, 2008

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন বহু দেশের বহু খ্যাতিমান ব্যক্তি। এঁদেরই একজন সুইডেনের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী (উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা) এবং সুইডিশ ফল্ক পার্টির অন্যতম নেতা লারস লেইয়নবরি। তিনিই প্রথম সুইডিশ, যিনি বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল পরিদর্শন করে সুইডিশ গণমাধ্যম ও সুইডিশ সরকারের ভেতর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে সে সময়ের কথা লিখেছেন সুইডেন থেকে প্রকাশিত দ্বিমাসিক পত্রিকা পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক লিয়াকত হোসেন ও সহকারী সম্পাদক কামরুল ইসলাম।

লারস লেইয়নবরি তখন এক টগবগে তরুণ। বয়স মাত্র ২১। ফল্ক পার্টির যুব সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালনের সূত্রেই খোঁজখবর রাখতে হতো তাবৎ দুনিয়ার। তখন তো আর এখনকার মতো ইন্টারনেট ছিল না। রেডিও, টিভি আর সংবাদপত্রই ছিল ভরসা। সংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত একাত্তরের মার্চ-পরবর্তী বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে আলোড়িত হন তিনি। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে হাজার হাজার শরণার্থী প্রবেশের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে চাঁদা সংগ্রহে নেমে পড়েন।

তৎকালীন সুইডিশ সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছিল না। কিন্তু লারস বুঝতে পারছিলেন বাংলাদেশের মানুষের দাবিটুকু কতটা ন্যায্য। কতটা অন্যায় আর অবিচার করা হচ্ছে তাদের ওপর। তিনি পুরো বিষয়টা বুঝতে চাইলেন আরও কাছে থেকে। যোগাযোগ করলেন তৎকালীন প্রবাসী সরকারের সঙ্গে। বিষয়টা লারস ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘আমার উদ্দেশ্য ছিল এ ভ্রমণের মাধ্যমে সত্যিকার সংবাদ সংগ্রহ করা এবং সুইডেনে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়ে তোলা। আমরা চাইছিলাম সরকার শরণার্থীদের সাহায্যের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধকেও সমর্থন এবং আর্থিক সাহায্য প্রদান করুক।’

লারস লেইয়নবরি ও যুব সংগঠনের আরেক সদস্য থুমাস বেরিলুন্দ (ফটোগ্রাফার ও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন) নভেম্বর মাসে দুই সপ্তাহের জন্য কলকাতায় আসেন। কলকাতা ভ্রমণ সম্পর্কে লারস বলেন, ‘কলকাতায় প্রথমত আমাদের উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থী ক্যাম্প দেখা এবং দ্বিতীয়ত মুক্ত বাংলাদেশে প্রবেশ করে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তথ্য নেওয়া। কলকাতা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমানায় তখন ভারতীয় সেনারা বিপুল সংখ্যায় সমাবেশ করছিল। শোনা যাচ্ছিল যে ভারত বাংলাদেশের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। কলকাতার পরিস্থিতি ছিল থমথমে।’

কলকাতায় বেশ কিছুদিন থাকার সময় তাঁরা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন, কীভাবে মুক্তাঙ্গনে প্রবেশ করবেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনুমতি পাওয়ার পর তাঁরা কলকাতার নিকটবর্তী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। মুক্তাঙ্গন থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর দূরত্ব ছিল প্রায় সাত কিলোমিটার। এক দিন এক রাত তাঁরা কাটান মুক্তাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধ দেখার সুযোগ হয়নি তাঁদের, কিন্তু অনেক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

সুইডেনে ফিরে এসে প্রথমবারের মতো স্থানীয় পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত সরাসরি তথ্য ও ছবি প্রকাশ করেন লারস। পাশাপাশি শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রচারণা চালাতে থাকে তিনি ও তাঁর সংগঠন। রাষ্ট্রীয়ভাবে লারস জোরেশোরে নি্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি রাখেন-
পাকিস্তানে সব সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া।
পাকিস্তান থেকে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করা (যেটা সুইডেন আগে করেছিল গ্রিস ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের সময়)।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করা।
জাতিসংঘের এজেন্ডায় বাংলাদেশের কথা তুলে ধরা।

তিনি সুইডেনের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ডেনমার্ক, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড ভ্রমণ করে বাংলাদেশ সম্পর্কে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে জনমত গড়ার প্রচেষ্টা চালান। এর মাধ্যমে তিনি আশা করছিলেন যে সুইডেন ও স্ক্যানডেনেভিয়ার অন্যান্য দেশ বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে সমর্থন জানাবে। এর পাশাপাশি চলতে থাকে সংগঠনের তহবিল জোগাড়। সংগ্রহ করা অর্থ লারস বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠান।

স্বাধীনতার পর লারস লেইয়নবরি বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছেন। সাক্ষাৎ করেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। তিনি কখনো বাংলাদেশকে ভুলে যাননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটিক্যাল সায়েন্সে লেখাপড়া করার শেষপর্যায়ে তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম দিকে গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে বাংলাদেশের সংবিধানের ওপর একটি প্রবন্ধ (ঊথিশমষথয়মসষ চথহপড়) লেখেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি রসিকতা করে বলেন, ‘আমার কোর্সে আমিই একমাত্র ছাত্র, যার বাংলাদেশের ওপর জানা ছিল, আর তাই আমার প্রতিপক্ষ আমাকে বিশেষ কোনো ঝামেলায় ফেলতে পারেনি।’

আজ সময় এসেছে তাঁকে আবার ্নরণ করার। লারস লেইয়নবরিকে মূল্যায়ন করা হোক রাষ্ট্রীয়ভাবে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে তাঁকে প্রদান করা হোক প্রাপ্য সম্মান।

ইতিমধ্যে সুইডেন-প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০০২ সালের ১ সেপ্টেম্বর লারস লেইয়নবরিকে প্রতীকী নাগরিকত্ব দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি করেছে, যেন তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।

সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৬, ২০০৮

Previous Post: « অর্থনীতির মন্দা ও বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন
Next Post: Wheat germ: Nutrition in a crunch »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top