• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

ডায়াবেটিস থেকে মুখের নানা রোগ

December 16, 2007

ডায়াবেটিস রোগটি প্রাচীন। খ্রিষ্টপুর্ব ৪০০ বছর আগে ভারতবর্ষের চিকিৎসকরা ‘মধুমেহ’, ‘ইক্ষুমুত্রের’ উল্লেখ করেছেন। ক্যাপাডেসিয়ার এরোটিউস এ রোগের নাম দেন ডায়াবেটিস (গ্রিক শব্দ অর্থ নির্গত হওয়া)। ১০০০ খ্রি. মুসলমান চিকিৎসা বিজ্ঞানী আবিসিনা বহুমুত্র রোগের চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন তার গ্রন্হে। বহুমুত্র রোগের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য মুত্রের মিষ্ট স্বাদ। ১৯২১ সালে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানিডিয়ান সার্জন ফ্রেডরিক প্রান্ট বেন্টিং এবং অধ্যাপক কেজেআর মার্কলিওড এবং এ সঙ্গে টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ বছরের তরুণ চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র চার্লস হার্বাট বেষ্ট বহুমুত্রের অগ্নাশয়ের সম্পর্ক অনুসন্ধান শুরু করেন। পুকুরের ওপর পরীক্ষা করে বেন্টিং বেষ্ট সঙ্গে অগ্নাশয় কোষপুঞ্জের নিঃসরণ নির্যাস করে হরমোন ইনসুলিন পৃথক করেন। হরমোন ইনসুলিনের ঘাটতির দরুনই যে বহুমুত্র রোগ হয়-এ তথ্যটি তাদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়।

এ রোগের মুল উপসর্গঃ অতিরিক্ত প্রসাব। প্রচন্ড তৃষ্ণা। প্রচুর ক্ষুধা। ওজন কমতে থাকা। ক্লান্ত লাগা। গা চুলকানো। চোখে অস্পষ্ট দেখা। মহিলাদের ঋতুচক্রের গোলমাল। কেটে গেলে না শুকানো ইত্যাদি। প্রস্রাব ও রক্তের রুটিন পরীক্ষায় ধরা পড়ে ডায়াবেটিস। বহুমুত্রের কারণ এখনো জানা যায়নি। কেউ বলেন, এ রোগ বংশগত। বহুমুত্র যে কেবল বড়দের রোগ তা নয়, শিশু-কিশোরদের মধ্যেও এ রোগ হয়। এ রোগ একবার হলে কখনো সারে না, তবে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখলে স্বাভাবিকভাবে সুস্হ জীবন-যাপন করা সম্ভব।

ডায়াবেটিস রোগটির সঙ্গে মুখের রোগগুলোর সম্পর্ক এখনো গবেষণার বিষয়বস্তু। তবে ইতোমধ্যে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বেশ উল্লেখযোগ্য মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। মুখের ভেতরে নানা ধরনের রোগ হতে পারে। যেমন-ডেন্টাল ক্যারিজ, মাড়ির রোগ, মুখের বিভিন্ন ধরনের সাদা ঘা, থলিকা, ক্ষতান্দুবোমা, দাঁতের ক্ষয়, কোষ প্রদাহ, আঁকাবাঁকা দাঁত ইত্যাদি। এসব রোগ দাঁতের বা মুখের অসুস্হতার কারণেই শুধু নয়, দেহের অন্য কোনো রোগ, অপুষ্টি বা বিপাকজনিত কারণেও হতে পারে। তাই অনেক সময় দেহের অন্যান্য রোগের লক্ষণ মুখের ভেতর দেখা যায়। মুখের রোগগুলোর মধ্যে ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহই পৃথিবীর সব দেশে বেশি।

আমরা জানি দেহে রক্তপ্রবাহের কাজ হচ্ছে কোষে অক্সিজেন ও অন্যান্য উপকরণ বহন করা এবং অবশিষ্ট বাজে অংশ বের করে আনা, কিন্তু ডায়াবেটিসের কারণে রক্তপ্রবাহগুলো চিকন বা সরু হতে থাকে। ফলে দেহে রক্তের স্বাভাকিক গতি ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। এ সময় মাড়িতে কোনো আঘাত লাগলে প্রদাহ দেখা দেয়। তাছাড়াও আগের কোনো মাড়ির রোগ থাকলে মাড়ির সংক্রমণ আরো বৃদ্ধি পায়।

ডায়াবেটিস রোগীদের মাড়ির প্রদাহ বেশি হওয়ার কারণ হলো-

  1. দেহে ইনসুলিন ঘাটতি হলে আমিষেরও ঘাটতি হয়, ফলে কোষকলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, সংস্কার ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই মুখের কোনো স্হানে ঘা হলেও প্রদাহ থাকলে শুকাতে দেরি হয়।
  2. দেহে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে আসে, ফলে দাঁতের গোড়ায় প্লাক জমাকালে সহজেই মাড়ির প্রদাহ শুরু হয়। ডায়াবেটিক রোগীর দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ রোগ হতে পারে। তার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন-
    • ক. মুখের লালার সঙ্গে গ্লুকোজ মুখে এক ধরনের অণুবীক্ষণিক জীবাণুর সঙ্গে মিশে অম্ল বা এসিড তৈরি করে। এই অম্ল দাঁতের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করতে থাকে এবং ধীরে ধীরে দাঁতের ভেতরে গর্তের সৃষ্টি করে।
    • খ. মুখের লালার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং পরিমাণ কমে যায়। ফলে মুখের অতিরিক্ত শুকনো পরিবেশে আহারের কণাগুলো ধুয়ে-মুছে যেতে পারে না। এ খাদ্য কণাগুলো দীর্ঘদিন দাঁতের গায়ে বা ফাঁকে জমে থেকে দাঁতের ক্ষয়রোধের পরিবেশ সৃষ্টি করে। মুখে খাদ্যকণা জমে থেকে যে আবরণ সৃষ্টি হয় এর নাম ডেন্টাল প্লাক। এই প্লাক লাখ লাখ অণুবীক্ষণিক জীবাণুর সমষ্টি। মুখের দুই প্রধান রোগ ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহে ডেন্টাল প্লাকই দায়ী।

ডায়াবেটিক রোগীদের যে কারণে ডেন্টাল প্লাক বৃদ্ধি পেতে পারে সেগুলো হচ্ছে-

  1. ডায়াবেটিস রোগ দেখা দেয়ার আগেই যাদের মাড়ির প্রদাহ বা দন্তাবরক প্রদাহ থাকে তাদের প্রবাহ নিঃসৃত রস বৃদ্ধি পায়। ফলে ডেন্টাল প্লাকও বাড়তে থাকে।
  2. বৃহৎ ক্ষুদ্র লালা গ্রন্হি থেকে নিঃসৃত রস বৃদ্ধি পায় এবং তা খাদ্যকণার সঙ্গে মিশে প্লাক তৈরি করে।
  3. দাঁত দিয়ে খাদ্যদ্রব্য চিবানোর কর্মক্ষমতা যাদের কমে যায় (ডায়াবেটিক রোগীর মাড়ির সংক্রমণ) তাদের মুখেও প্লাকের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্য নিয়ন্ত্রিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাড়ির ও দাঁতের ধারণ শক্তি এবং প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়, ফলে খাওয়ার সময় বাধা অনুভুত হয়, তাই চিবিয়ে খাবার প্রবণতাও হ্রাস পায়। এ সবের জন্য ডায়াবেটিক রোগীদের প্লাক বৃদ্ধিও তাড়াতাড়ি হয়।

ডায়াবেটিক রোগীদের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেমন তিনটি D নেমে চলতে হয়। যথা-D-Diet, D-Drug, D-Discipline। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের মুখের রোগ প্রতিরোধ তিনটি D মেনে চলা প্রয়োজন।

খাদ্য

প্রথমেই উমপয় বা খাদ্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, শর্করা বা চিনিজাতীয় খাদ্য গ্রহণের পর মুখ পরিষ্কার না হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ধরনের অম্ল বা এসিড তৈরি হয় এবং তা দাঁতকে ক্ষয় করতে থাকে। এই ক্ষয় পদ্ধতির নামই ডেন্টাল ক্যারিজ। তাছাড়া খাদ্যকণা জমে থাকায় যে আবরণ বা প্লাক সৃষ্টি হয় সেই প্লাক ধীরে ধীরে মাড়িকে আক্রমণ করে, ফলে মাড়ির প্রদাহ বা দন্তাবরক প্রদাহ শুরু হয়।

প্লাক প্রতিরোধ

  1. মুল আহার গ্রহণের (সকালে নাশতা, দুপুরের খাবার, রাতের খাবার) মধ্যবর্তী সময়গুলোতে চিনি বা শর্করা জাতীয় খাদ্য (যেমন চকোলেট, বিস্কুট, লজেস, কেক, টফি, টুইংগাম, আইসক্রিম, মন্ডা মিঠাই) খাওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।
  2. আহার গ্রহণের পরপরই ভালোভাবে কুলিকুচি, মুখ পরিষ্কার ও দু’বেলা সকালে ও রাতে দাঁত ব্রাশ করা প্রয়োজন।
  3. ডিসক্লোজিং ট্যাবলেট পানিতে গুলে ওই পানিতে কুলিকুচি করলে খাদ্যকণাগুলোর রং পরিবর্তন হবে (লাল রং) তখন প্লাক শনাক্ত করে খাদ্যকণাকে ব্রাশ বা মেসওয়াক করলে সহজেই পরিষ্কার করা যায়।

ওষুধ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেমন নিয়মিত ইনসুলিন বা ট্যাবলেটজাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি দন্তক্ষয় রোগ প্রতিরোধ বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার ফ্লুরাইড ব্যবহারের মাধ্যমে। আমাদের দেশে ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেষ্টই একমাত্র সহায়ক।

ডেন্টাল ক্যারিজ প্রতিরোধ

  1. নিয়মিত দু’বেলা সকাল ও রাতে (আহারের পর) ফ্লুরাইডমিশ্রিত টুথপেষ্ট দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
  2. ফ্লুরাইড ট্যাবলেট, ফ্লুরাইড জেল অথবা ফ্লুরাইডমিশ্রিত পানি গ্রহণ করা (অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণে)। পানিতে সাধারণত ফ্লুরাইডেশন করা হয় ১ মিলিয়নের মধ্যে ১ ভাগ ফ্লুরাইড যুক্ত করে। কারণ নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি ফ্লুরাইড গ্রহণ দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।

শৃংখলা

ডায়াবেটিক রোগীদের যেমন নিয়মিত ব্যায়াম, পরিমিত আহার, রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করতে হয়, তেমনি মুখের রোগ প্রতিরোধেও কতগুলো নিয়ম মেনে চলতে হয়।

দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধঃ শৃংখলা

  1. দু’বেলা সকাল ও রাতে (আহারের পর) দাঁত পরিষ্কারের সময় আঙুলের সাহায্যে অন্তত ২/৩ মিনিট মাড়ি মালিশ করা, যাতে মাড়ির ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণাগুলো চাপে বেরিয়ে আসে ও রক্ত সঞ্চালন বেগ স্বাভাবিক থাকে।
  2. রোগ প্রতিরোধ আহারের মধ্যবর্তী সময়ে শর্করা বা চিনিজাতীয় খাদ্য পরিহার করা প্রয়োজন (খেলেও সঙ্গে সঙ্গে দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করে ফেলা)।
  3. নিয়মিত একজন দন্তরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে (বছরে দু’বার ৬ মাস অন্তর) দাঁত, মাড়ি ও মুখগহ্বরের অবস্হা পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এর ফলে প্রাথমিক অবস্হায় রোগের লক্ষণ ধরা পড়তে পারে এবং অল্প ও সহজ চিকিৎসায় ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু মাড়ির প্রদাহ বা দন্তক্ষয় রোগ অতিমাত্রায় বাড়তে থাকলে চিকিৎসা জটিল হয় এবং ব্যয় দ্বিগুণ হয়। পরে দাঁত হারানোর ঝুঁকিও বেশি থাকে।
  4. যদি ডায়াবেটিক রোগীরা এই ত্রিরত্মের (তিনটি ডি) সঙ্গে পরিচিত হয়ে যান এবং নিয়মিতভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তবে দাঁত ও মাড়ি সব সময় সুস্হ থাকবে।

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য দাঁত বা মুখের যত্মের কয়েকটি সতর্কীকরণ ইঙ্গিত

  1. সর্বপ্রথমেই ডায়াবেটিক রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা প্রয়োজন। রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাই হচ্ছে দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। মাড়ির অতিরিক্ত প্রদাহ অনেক সময় ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে অনেক অসুবিধার সৃষ্টি করে। যদি কোনোভাবে কখনো দাঁত ও মাড়ির প্রদাহ শুরু হয়, তবে ওই ঘা শুকাতে সার্জনের কাছ থেকে আপনার মুখের যত্মের জন্য কি কি করা প্রয়োজন তাও জেনে নেয়া প্রয়োজন।
  2. প্রতি ছয় মাস অন্তর একজন ডেন্টাল সার্জনকে দিয়ে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ডেন্টাল সার্জনকে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস রোগের কথা বলে রাখবেন। যাতে আপনার দাঁত ও মাড়ি সুস্হ থাকে সেজন্য ডেন্টাল সার্জনের কাছ থেকে আপনার মুখের যত্মের জন্য কি কি করা প্রয়োজন তাও জেনে নেয়া প্রয়োজন।
  3. প্রতিদিন দু’বেলা সকাল ও রাতে দাঁত ব্রাশ এবং মাড়ির জন্য প্রয়োজন একটি নরম টুথপেষ্ট। ব্রাশটিকে উপরের পাটির দাঁত থেকে নিচের পাটির দাঁত আবার নিচের পাটি থেকে উপরের পাটির দিকে-এভাবেই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার করা বিজ্ঞানসম্মত। দুই দাঁতের ফাঁক থেকে খাদ্যকণা বের করে দেয়ার জন্য ডেন্টাল ফ্লস বা এক ধরনের সুতা ব্যবহার করা ভালো।
  4. কখনো যদি আপনার মাড়ি থেকে দাঁত ব্রাশ এর সময় বা খাবার খাওয়ার সময় রক্ত বের হয়, তবে তা আপনার মাড়িতে প্রদাহের পুর্ব লক্ষণ কিনা বোঝার জন্য অবশ্যই একজন ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ গ্রহণ প্রয়োজন। মনে রাখবেন প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়, এবং তা শস্তা ও নিরাপদ ব্যবস্হা।

দৈনিক আমারদেশ, ১৬ ডিসেম্বর ২০০৭
লেখকঃ অধ্যাপক ডাঃ অরূপ রতন চৌধুরী
লেখকঃ বিভাগীয় প্রধান, ডেন্টিস্ট্রি বিভাগ, বারডেম

Previous Post: « শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য
Next Post: শিশুর কানে ব্যাথা »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top