• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

অস্বাভাবিক অস্ত্রোপচার!

June 9, 2012

খুলনার দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২০১১ সালে খাতা-কলমে অ্যাপেন্ডিসেকটমি বা অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচার হয়েছে ২৪৯টি। এই হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে ২০টি অ্যাপেন্ডিসেকটমি হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তবে বাস্তবে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা আরও বেশি বলে কেন্দ্রের একটি তদন্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে।
দাকোপের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশু জন্মের হারও বেশি। চলতি বছরের প্রথম চার মাসের হিসাব ধরলে প্রতি মাসে গড়ে ২২টি শিশু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব করানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, দুই ক্ষেত্রেই টাকার বিনিময়ে এসব অস্ত্রোপচার করা হয়।
খুলনা জেলার অন্য উপজেলা পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসে একটি বা দুটি অস্ত্রোপচার হয়। কোনো মাসে একটিও হয় না।
দাকোপের এই অস্ত্রোপচারের তথ্য জানিয়ে মতামত জানতে চাইলে বেসরকারি স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনজেন্ডারহেলথের এদেশীয় পরিচালক আবু জামিল ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, একটি উপজেলায় এত বেশি অস্ত্রোপচারের ঘটনা স্বাভাবিক নয়। সরকারের তদন্ত করে দেখা উচিত।
ক্ষুদ্রান্ত্রের একটি বর্ধিত অংশের নাম অ্যাপেন্ডিক্স বা উপাঙ্গ। দেখতে অনেকটা কনিষ্ঠ আঙুলের মতো। কোনো কারণে এই উপাঙ্গে সংক্রমণ হলে তাকে বলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস। সংক্রমণ মারাত্মক হলে উপাঙ্গে ব্যথা হতে থাকে, অনেক সময় তা ফেটেও যেতে পারে। ফেটে গেলে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিশ্চিত হলে তাই অ্যাপেন্ডিসেকটমির পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
দাকোপ উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে কামারখোলা গ্রাম। গ্রামের লিপি খাতুনের অ্যাপেন্ডিসেকটমি হয়েছে কয়েক মাস আগে। লিপি ছাড়াও তার দুই চাচি ও তিন চাচাতো বোনের একই অস্ত্রোপচার হয়েছে।
লিপির বাবা দিনমজুর নজরুল গাজী প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের পেটে ব্যথা হলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক অ্যাপেন্ডিক্স ফেলে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারের জন্য ওষুধ কেনা ছাড়াও চিকিৎসককে আলাদা করে টাকা দিয়েছেন তিনি।
শুধু ওই পরিবারের ছয়জনই নয়, গ্রামেরই উত্তর কামারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে আরও রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। জান্নাতুল হাওলাদার, ছখিনা খাতুন, জুয়েল শিকদার, দেলওয়ার শেখ (তৃতীয় শ্রেণী); সাথী খাতুন, সুমাইয়া আক্তার নূরী (চতুর্থ শ্রেণী), রবিউল শিকদার (দ্বিতীয়) ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদের প্রত্যেকের তলপেটের ডান দিকে অস্ত্রোপচারের চিহ্ন। গত কয়েক মাসে এসব শিশুর অ্যাপেন্ডিসেকটমি করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
রবিউলের দিনমজুর বাবা শওকত শিকদার বলেন, ছেলের পেটে ব্যথা হলে এক চিকিৎসক বলেন, কিডনির সমস্যা হয়েছে। চিকিৎসায় ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে। মন খারাপ করে উপজেলার সরকারি চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি বলেন, অ্যাপেন্ডিক্স কেটে ফেলে দিতে হবে। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর দেড় হাজার টাকায় অস্ত্রোপচার করতে রাজি হন তিনি। কথা বলা সম্ভব হয়েছে এমন প্রত্যেক অভিভাবকই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসককে অর্থ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
বিপুল এই অস্ত্রোপচারের বিষয়ে মূলত যাঁর বিরুদ্ধে বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে, তিনি দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (স্ত্রীরোগ) সন্তোষ কুমার মজুমদার। তবে তিনি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারের পর রোগী পক্ষ চা-মিষ্টি খাওয়ার অনুরোধ করে।
অর্থের বিনিময়ে অস্ত্রোপচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক নিজামীও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের আগে আমরা রোগীর আত্মীয়স্বজনকে দোকান থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে আনতে বলি। অনেক সময় তারা ওষুধ কেনার জন্য আমাদের টাকা দেয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের জন্য আমি কোনো টাকা নিই না।’
প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি: দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, মার্চ মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পরই তাঁর মনে হয়েছে এই কেন্দ্রে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে কম দেখানো হয়।
ওটির দায়িত্বে থাকা সিনিয়র স্টাফ নার্স অর্চনা রানী টিকাদার কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হিসাবে বলেছেন, গত এপ্রিল মাসে ২০ জন রোগীর অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচার হয়েছে। পরিসংখ্যানের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাও প্রথম আলোকে এই সংখ্যা জানিয়েছেন। কিন্তু বিধান চন্দ্র ঘোষ বলেন, অন্তর্বিভাগের টিকিট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচারের সংখ্যা ৪৭। সংখ্যার এই গরমিল দেখে ২০ মে তিনি ‘রোগীর সঠিক তথ্য প্রদান না করিবার জন্য কৈফিয়ত তলব’ করে অর্চনা রানীকে চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, অর্চনা ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করে কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করছেন।
অর্চনা রানী ২৮ মে ‘কৈফিয়ত তলবের জবাবে’ লিখেছেন, ‘অপারেশনকারী চিকিৎসকদের মৌখিক নির্দেশ অনুসারে অপারেশনকৃত অ্যাপেন্ডিক্স রোগীর সংখ্যা কম দেখানো হইত। প্রকৃতপক্ষে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য গোপন করিয়া সংখ্যায় কম রিপোর্ট প্রদানে আমাকে বাধ্য করা হইত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুনিয়র কনসালট্যান্ট সন্তোষ কুমার মজুমদার দাবি করেন, তথ্য কম দেখানোর সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
বিধান চন্দ্র ঘোষ এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘পরিসংখ্যান বা রোগীর তথ্য গোপন করার একটা প্রক্রিয়া এখানে চালু আছে। সুতরাং, বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে যেসব রোগীর তথ্য আপনি সংগ্রহ করেছেন, তার সঙ্গে হাসপাতালের তথ্যের মিল না-ও থাকতে পারে।’
জানতে চাইলে বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, দেশের ছোট একটি এলাকায় অ্যাপেন্ডিসাইটিসের প্রকোপ বেশি দেখা দেবে, এটা অস্বাভাবিক। তাই সরকারের উচিত এলাকাটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের দ্রুত তদন্ত করা।
অস্ত্রোপচারে জন্ম বেশি: সম্প্রতি প্রকাশিত জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে বলা হয়েছে, ১০০টি প্রসবে ১৭টি হচ্ছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। কিন্তু দাকোপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এই হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসব হয় ৮৮টি এবং অস্ত্রোপচারে প্রসব হয় ৯০টি। প্রতি মাসে গড়ে ২২টি অস্ত্রোপচার হয়েছে।
অত্যধিক অস্ত্রোপচার সম্পর্কে সন্তোষ মজুমদার দাবি করেন, এলাকায় বেশ কয়েকটি এনজিও স্বাভাবিক প্রসব নিয়ে কাজ করছে বলে সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বেশি বলে মনে হচ্ছে। তবে এনজিওগুলোর মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের পরিসংখ্যান তিনি প্রতিবেদককে জানাতে পারেননি।
প্রসূতি সেবা নিয়েছেন এমন দুজন রোগীর আত্মীয় অভিযোগ করেছেন, অস্ত্রোপচারের আগে চিকিৎসককে টাকা দিতে হয়েছিল। এদের একজনের স্ত্রী অস্ত্রোপচারের পাঁচ মাসের মাথায় মারা যান।
হাসপাতালের সূত্র, রোগী ও রোগীদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অ্যাপেন্ডিসেকটমি ও প্রসূতি অস্ত্রোপচারের জন্য চিকিৎসকেরা নিয়ে থাকেন যথাক্রমে দেড় ও তিন হাজার টাকা। অ্যাপেন্ডিসেকটমি থেকে এপ্রিল মাসে চিকিৎসকদের আয় ছিল ৭০ হাজার টাকা। অস্ত্রোপচারে শিশু জন্ম দিয়ে আয় ৪৮ হাজার টাকা (হিসাব আছে ১৬টি অস্ত্রোপচারের)।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসচিব মুহম্মদ হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে পুরো ঘটনা অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।

শিশির মোড়ল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৯, ২০১২

Previous Post: « প্লাস্টিক বোতলের পানি কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
Next Post: নিবন্ধনহীন ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার, মা ও গর্ভের শিশুর মৃত্যু »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top