• Skip to main content
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

বিষয়বস্তু অনুসারে

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

অন্যান্য সেকশন

  • লাইব্রেরি
  • ইবুক / PDF
  • জোকস
  • লিরিক
  • ডিকশনারি
  • ই-বাংলা

বাংলা লাইব্রেরি

Read Bangla Books (বাংলা বই) online FREE. No PDF download required for Bengali Books. Bangla Book Library is a Unicode based mobile friendly website.

Bangla Library

খিঁচুনির নাম ইপিলেপ্সি

You are here: Home / স্বাস্থ্য সংবাদ / খিঁচুনির নাম ইপিলেপ্সি

নবম শ্রেণীতে পড়া ক্লাসের ফার্স্ট মেয়েটি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়। সে কী খিঁচুনি, চোখ উল্টে মুখ দিয়ে ফেনা গড়াচ্ছে, কী হলো, কী হলো বলে বান্ধবীদের কান্না, শিক্ষকের উদ্বেগ, আত্মীয়স্বজন সবাই ছুটে এলেন, ওঝা এলেন মরিচের ধোঁয়া, জুতা পড়া আর তাবিজ নিয়ে। ম্যাডাম বললেন, এই জ্ঞান আসছে, তোমরা ভিড় কমাও, চিকিৎসক ডাকো। চাচা বললেন, না থাক, ওঝাই দেখুক। মা বললেন, ও এমন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায় কেন, কাউকে চিনছে না—এ আমার কী হলো। মেয়ে হঠাৎ বলে ওঠে, আমি কোথায়? মা, কাঁদছ কেন? ওঝা বললেন, ভয় নেই, অশান্ত পেতনিটা চলে গেছে, এই মাদুলিটা পরুক, কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, সে যেন ভর সন্ধ্যাবেলায় গাবতলা দিয়ে চলাফেরা না করে। সে কথাই ফলল আবার তিন দিন পরে। রাতে খাওয়ার আগেই মেয়ের উপরিবাই আবারও ফিরে আসে। এবার গাছে বেঁধে পেতনিকে পিটিয়ে গ্রামছাড়া করল। মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ, মায়ের প্রাণ মানে না। মেয়েকে নিয়ে এলেন একজন তরুণ চিকিৎসকের কাছে, চিকিৎসক হুংকার দিলেন ওঝাকে বেঁধে আনার।
চিকিৎসা নিয়ে আজ সেই ছোট মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী। হ্যাঁ, এটাই ইপিলেপ্সি রোগ।
ইপিলেপ্সি বা মৃগী রোগ গ্রিক শব্দ ইপিলেপ্সিয়া থেকে এসেছে। ইপিলেপ্সি একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং এ রোগে বারবার খিঁচুনি দেখা দেয়। মানুষের মস্তিষ্কে অল্প সময়ের জন্য অধিক মাত্রায় বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক পরিবর্তন হওয়াই এর মূল কারণ। কেউ কেউ একে মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক গোলযোগ বলে থাকে। বাংলায় একে তড়কা বা সন্ন্যাস রোগও বলা হয়। খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত রোগীর কিছু নিয়ম মানতে হবে—
 আগুনের কাছে যাবে না।
 ছাদে উঠবে না।
 বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করবে না।
 একা রাস্তা পার হবে না।
 পুকুর বা নদীতে গোসল করবে না।
 বিপজ্জনক কোনো যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করবে না।
 এ রোগে পেশাগত কাজে কোনো বাধা না থাকলেও গাড়ি চালানো উচিত নয়।
 চিকিৎসকের ক্ষেত্রে যাঁরা সার্জন বা শল্যচিকিৎসক, তাঁদের পেশা পরিবর্তন করা উচিত।
 অতিমাত্রায় টিভি দেখা বা কম্পিউটার ব্যবহার করা ঠিক নয় (টেলিভিশন বা কম্পিউটারের মনিটরের কম্পমান আলো ইপিলেপ্সির সৃষ্টি করতে পারে)।
 অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে খিঁচুনি হতে পারে।
 উচ্চশব্দ ও গরম পানিতে গোসলের কারণে খিঁচুনি হতে পারে।
এসব রোগীকে ওপরের কারণ এড়িয়ে চলা উচিত।
এ সম্পর্কে রোগী ও তার আত্মীয়স্বজন সবারই ধারণা থাকা উচিত। কোনো কোনো মহিলা মাসিকের সময় এ রোগে ভোগেন। ওষুধ খাওয়ার সময় সন্তান ধারণ করতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে, ভেলপোরেট-জাতীয় ওষুধ খাওয়ার সময় সন্তান ধারণ উচিত নয়। তবে কার্বামাজেপিন ওষুধ গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। আধুনিক ওষুধে মাতৃদুগ্ধ পান অথবা পড়াশোনায় কোনো অসুবিধা হয় না।
 রোগীকে সাঁতার কাটা, গাড়ি চালানো, মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেল চালানো থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখতে হবে।
 এ রোগে সংসার করা, লেখাপড়া করা, বিয়ে করায় কোনো নিষেধ নেই।
 এসব ওষুধ চলাকালীন ইনডাইজেশনের ওষুধ, অ্যান্টাসিড, এসপিরিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম একসঙ্গে খাওয়া নিষেধ।
 রোজ একই সময়ে ওষুধ খেতে হবে।
এ ধরনের রোগীর গলায় একটা লকেটের ভেতর কাগজে তার পরিচয় এবং ফোন নম্বর লিখে রেখে দেওয়া উচিত।
আসুন, ইপিলেপ্সির কারণ সম্পর্কে একটু ধারণা নিই—ব্রেন টিউমার, মাথায় আঘাত লাগা, রক্তে লবণের তারতম্য, স্ট্রোক, ইনফেকশন (মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস), শরীরে লবণের তারতম্যের পাশাপাশি কোনো নির্দিষ্ট কারণ না-ও থাকতে পারে।
লক্ষণ: বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শরীরে জোরে জোরে ঝাঁকুনি, বাচ্চার চোখ উল্টে যাওয়া, শরীর দোলানো, জোরে কাঁদা ইত্যাদি ঘটার মাধ্যমে আক্রমণের সূত্রপাত হয়। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সময় বাচ্চা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এতে শরীরে আঘাত লাগা, তারপর জিহ্বায় কামড় লাগতে পারে।
অনেকেই খিঁচুনি হওয়ার আগে বুঝতে পারেন। রোগীর শরীরে অস্থিরতা থাকে, পেট ফাঁপা থাকে, সময়কে ‘অরা’ বলা হয়। এরপর রোগী মাটিতে পড়ে গিয়ে খিঁচুনি শুরু হয়। তারপর শরীর শিথিল হয়। তারপর অনেকক্ষণ রোগী কিছুই চিন্তা করতে পারে না বা মনে করতে পারে না। শরীরে খুব ব্যথা ও দুর্বলতা দেখা যায়।

পরীক্ষা: ইপিলেপ্সির কারণ নির্ণয়ের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইইজি এবং এমআরআই করা প্রয়োজন। এ দুই পরীক্ষায় রোগীর কোনো ক্ষতি হয় না। ইইজির মাধ্যমে ব্রেনের বৈদ্যুতিক সংকেতগুলো পরিমাপ করা হয়। এতে খিঁচুনির ধরন ও উৎসস্থল নির্ণয় করা যায়। এমআরআইয়ের মাধ্যমে ব্রেনের গঠন বোঝা যায়।
চিকিৎসা: রোগীকে শোয়াতে হবে। (সম্ভব হলে এক পাশে কাত করে দিতে হবে)। কোমর তথা শরীরের সব শক্ত বাঁধন খুলে দিতে হবে। হাত ও পায়ের কাছের সবকিছু, যাতে আঘাত লাগার আশঙ্কা থাকে, তা সরিয়ে নিতে হবে। যত শিগগির সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এ রোগের চিকিৎসার জন্য কমপক্ষে তিন বছর একটানা ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে তিন-চার মাস ওষুধ ব্যবহারের পর রোগী ও তার আত্মীয়রা মনে করে, রোগ সেরে গেছে এবং ওষুধ বন্ধ করে দেয়। এ কাজ কখনোই করা উচিত নয়। এভাবে বন্ধ করার ফলে খিঁচুনি আবারও ফিরে আসে। নতুন করে তৈরি হওয়া এ খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণ করা প্রায়ই অসম্ভব হয়ে যায়।
এ রোগ চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ওষুধ পাওয়া গেলেও সব ওষুধেরই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। ফলে চিকিৎসা চলাকালে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এসব ওষুধ লিভার, কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, হতে পারে স্টিভেন জনসন সিনড্রোম নামক প্রাণঘাতী জটিলতা, রক্তের অণুচক্রিকা কমে যেতে পারে—এসব কথা জেনে ওষুধ খাওয়াতে হবে, একবারের জন্যও ওষুধ বন্ধ করা যাবে না, এমনকি চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ওষুধের কোম্পানিও পরিবর্তন করা যাবে না। বলা হয়, ভাত খেতে ভুলে গেলেও ওষুধ খেতে ভুলবেন না। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে চিকিৎসকই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। উপায় নেই। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যদি হয় চোর, খিঁচুনি হলো ডাকাত।
তাই তো চোর রেখে ডাকাতের সঙ্গে সহবাস। কোনো কোনো ক্ষেত্রে খিঁচুনি ওষুধে নিয়ন্ত্রণ হয় না। তখন মস্তিষ্কে অপারেশনের প্রয়োজন হয়। আধুনিক সময়ে ডিবিএস নামক যন্ত্রের সাহায্যে অপারেশনে বেশ সফলতা পাওয়া গেছে। খিঁচুনির সব ওষুধকে অ্যান্টিইপিলেপ্টিক বলা হয়। এ ধরনের সব ওষুধই লিভারের সমস্যা, রক্তে সমস্যা, শরীর ও চামড়ায় দাগ বা বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এর প্রধান কারণ প্রসবকালীন নবজাতকের মস্তিষ্কে আঘাত লাগা। এ রোগ বংশধরদের ভেতরে সরাসরি প্রবাহিত না হলেও একই পরিবারে বেশি লক্ষ করা যায়। অনেক সময় বাচ্চাদের অতিরিক্ত মাত্রায় জ্বরের কারণে খিঁচুনি হয়ে থাকে। একে ফেব্রাইল কনভালশন বলা হয়।

শেষ কথা: ইপিলেপ্সি চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ রোগ সম্বন্ধে রয়েছে অনেক কুসংস্কার। অনেকের ধারণা, জিনের আছর লাগা, মন্দ বাতাস, অভিশাপ প্রভৃতি এ রোগের কারণ, যা সঠিক নয়। ডাক্তার সাহেব, কত দিন ওষুধ চালাব—এখন তো আর পারি না, রোগীর খিঁচুনিও বন্ধ, দামেও পারি না। প্রয়োজনে কম দামের ওষুধ খাওয়ান, কিন্তু দয়া করে বন্ধ করবেন না, না, না। বিশেষজ্ঞের মত অনুযায়ী ওষুধ কমাতে হয় অথবা বন্ধ করতে হয়। খিঁচুনি আবারও ফিরে এলে আবার ওষুধ শুরু করতে হবে।
আসুন, সবাই মিলে অনুধাবন করি—এ রোগ মস্তিষ্কের এবং এ রোগের বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা সম্ভব।

সুদীপ্ত কুমার মুখার্জি
জুনিয়র কনসালট্যান্ট (নিউরোসার্জারি)
শহীদ শেখ আবু নাসের স্পেশালাইজড হাসপাতাল, খুলনা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৫, ২০১১

January 26, 2012
Category: স্বাস্থ্য সংবাদTag: খিঁচুনি, সুদীপ্ত কুমার মুখার্জি

You May Also Like…

কানে পানি গেলে কি বের করে আনাটা জরুরি?

ব্যায়ামে আলসেমি কাজ করলে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলুন, মিলবে সমান উপকার

মুখের দুর্গন্ধ কি শুধু মুখ থেকেই আসে?

জিম শুরু করার ৭ উপায়

Previous Post:আধকপালি মাথাব্যথা
Next Post:ক্যালসিয়ামের উৎস

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health Tips

Return to top