• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

অটিস্টিক শিশুকে বিশেষ গুরুত্ব দিন

February 20, 2008

দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘রেইন ম্যান’-এ বিশ্বখ্যাত অভিনেতা ডাস্টিন হফম্যান একজন অটিস্টিকের চরিত্র রূপায়ণ করে, অটিস্টিক মানুষের বিভিন্ন লক্ষণ নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। যাঁরা চলচ্চিত্রটি দেখেছেন তাঁরা অটিজম সম্পর্কে অবশ্যই কিছুটা ধারণা পেয়েছেন।

আর আমাদের আশপাশে হয়তো আমরা এমন কিছু শিশু কখনো দেখে থাকি, যারা নিজের ভেতর গুটিয়ে থাকে, সামাজিকভাবে আর দশটা শিশুর মতো বেড়ে ওঠে না এবং আচরণগত অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। এ ধরনের রোগলক্ষণ থাকলে তাকে বলা হয় অটিজম।

অটিজম এক ধরনের রোগ, আর যেসব শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয় তাদের বলা হয় অটিস্টিক শিশু।

শিশু অবস্থাতেই এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুর বয়স তিন বছর হওয়ার আগেই অটিজমের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। অটিস্টিক শিশুর ক্ষেত্রে সাধারণত যেসব অস্বাভাবিকতা দেখা যায় তা হলো-

এক·
* স্বাভাবিক একটি শিশু যেভাবে বেড়ে ওঠে, যেভাবে সামাজিক সম্পর্কগুলোর সঙ্গে ধীরে ধীরে যোগাযোগ তৈরি করে, সেই প্রক্রিয়া অটিস্টিক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় না।
* সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন প্রক্রিয়ায় শিশুর গুণগত ঘাটতি থাকে। বাবা-মা বা প্রিয়জনের চোখে চোখ রাখতে, মুখভঙ্গি ও শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নিজের চাওয়া বা না-চাওয়া বোঝাতে সে অপারগ হয়।
* সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে না, অমিশুক প্রবণতা থাকে।
* কোনো ধরনের আনন্দদায়ক বস্তু বা বিষয় সে অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে না, যেমন স্বাভাবিক একটি শিশু কোনো খেলনা হাতে পেলে সেটার দিকে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে; কিন্তু অটিস্টিক শিশুর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো খেলনার প্রতি নিজস্ব কিছু আগ্রহ থাকলেও সেটা নিয়ে তার কোনো উচ্ছ্বাস থাকে না।
* অটিস্টিক শিশুর বাবা-মায়েরা বলে থাকেন, ‘আমার বাচ্চা আদর করা পছন্দ করে না!’ দেখা যায় শারীরিক আদর, চুমু দেওয়া, চেপে ধরে কোলে নেওয়াটা অটিস্টিক শিশুরা খুবই অপছন্দ করে। তারা কারও কোলে চড়তে পছন্দ করে না।

দুই·
* পরিবেশ ও প্রতিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষমতা গড়ে ওঠার বিষয়টি শিশুর গঠনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। অটিস্টিক শিশুর ক্ষেত্রে এই যোগাযোগ তৈরি করার ক্ষমতা কমে যায়, দেখা যায় দুই থেকে তিন বছর বয়সে স্বাভাবিক শিশুরা যেসব শব্দ উচ্চারণ করতে পারে, সমবয়সী অটিস্টিক শিশুরা তা পারে না। বাবা-মায়েরা বলেন, ‘আমার বাচ্চা তো এখনো কথা বলা শিখল না।’
* আবার কোনো ক্ষেত্রে অটিস্টিক শিশুটি স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে হয়তো পারে কিন্তু একটি বাক্য শুরু করতে তার অস্বাভাবিক সময় লাগে অথবা বাক্য শুরু করার পর তা শেষ করতে পারে না।
* কখনো বা দেখা যায়, একই শব্দ বারবার সে উচ্চারণ করে যাচ্ছে। অটিস্টিক শিশুকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘তুমি কি চকলেট পছন্দ কর?’ দেখা যায় এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সে প্রশ্নটিই আবার উচ্চারণ করে, ‘তুমি কি চকোলেট পছন্দ কর?’
* তিন বছরের কম বয়সী শিশুরা তার বয়সের উপযোগী নানা রকম খেলা স্বতঃস্কূর্তভাবে নিজেরাই তৈরি করে খেলে; কিন্তু অটিস্টিক শিশুরা এ রকমটি করে না।

তিন·
* বিশেষ ধরনের আচরণ বারবার সে করতে থাকে। হয়তো হাত দোলাতে থাকে বা আঙ্গুল নাড়াতে থাকে।
ষ আওয়াজ পছন্দ করে না।
* তারা রুটিন মেনে চলতে ভালোবাসে। দৈনন্দিন রুটিনে গরমিল হলে অটিস্টিক শিশুরা মন খারাপ করে। রাতে ঘুমানোর আগে হাতমুখ ধুয়ে, কাপড় বদল করে বিছানায় যাওয়ার অভ্যাস হয়তো সব শিশুরই থাকে, কিন্তু কখনো এর ব্যত্যয় ঘটলে সাধারণ শিশুরা কিছু মনে না করলেও অটিস্টিকদের বেলায় দেখা যায়, তারা খুবই মন খারাপ করে। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন তারা সহ্য করতে পারে না।
* কোনো কোনো অটিস্টিক শিশু কোনো কারণ ছাড়াই দেখা যায় হঠাৎ রেগে ওঠে বা ভয়ার্ত হয়ে যায়।
* অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে ২৫ শতাংশের খিঁচুনি থাকতে পারে।

ওপরের লক্ষণগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি সাময়িক সময়ের জন্য স্বাভাবিক শিশুদের মধ্যেও থাকতে পারে, তাই একটি লক্ষণ দেখেই বাবা-মায়েরা যেন ভেবে না বসেন তার শিশুটি অটিস্টিক। আর একজন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে যে ওপরের সবগুলো লক্ষণ একসঙ্গে থাকবে তাও নয়। আবার মা-বাবাদের এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে এ ধরনের কয়েকটি লক্ষণ তার সন্তানের মধ্যে বেশি দিন ধরে দেখা যাচ্ছে কি না। যদি তা হয় তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, বিশ্বের প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে একজন অটিজমে আক্রান্ত হয়। মেয়েদের তুলনায় ছেলেশিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় চার গুণ বেশি। বর্তমান সময়ে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এবং আমাদের দেশেও অটিজম অত্যন্ত আলোচিত একটি বিষয়। কিন্তু অটিজম কেন হয় তার সুস্পষ্ট কারণ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে জীনগত প্রভাব এ রোগের ওপর আছে। সাধারণ যেকোনো শিশুর চেয়ে যাদের ভাই বা বোন অটিস্টিক তাদের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৫০ গুণ বেশি।

ধারণা করা হয়, ক্রোমোজম নম্বর ৭ক্ষ-এর অস্বাভাবিকতার সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক আছে। গর্ভাবস্থায় বা সন্তান জ্নানোর সময় জটিলতা হলে অটিজম হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে বলে মনে করা হয়। স্বাভাবিক শিশুদের বেলায় সাধারণত দেখা যায়, চার বছর বয়সের মধ্যেই তারা অন্যদের, বিশেষ করে সমবয়সীদের চিন্তাধারা সম্পর্কে ধারণা করতে শেখে; কিন্তু অটিস্টিক শিশুরা এ বয়স থেকে নিজের ভেতর গুটিয়ে যায়, অন্যরা কী করছে বা ভাবছে এ-সংক্রান্ত চিন্তা করার ক্ষমতা তাদের থাকে না।

অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ শিশু চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠে এবং সাধারণ স্কুলে স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে পড়ালেখা করতে পারে। আরও ১০ থেকে ২০ শতাংশ শিশু স্বাভাবিক শিশুদের সঙ্গে পড়তে পারে না, তারা বাসায় থাকে বা তাদের জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষায়িত স্কুল ও বিশেষ প্রশিক্ষণের; বিশেষায়িত স্কুলে পড়ে, ভাষাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তারা সমাজে মোটামুটি স্থান করে নেয়।

কিন্তু বাদবাকি প্রায় ৬০ শতাংশ অটিস্টিক শিশু, সব ধরনের সহায়তা পাওয়ার পরও স্বাধীনভাবে, এককভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে না, তাদের জন্য প্রয়োজন হয় দীর্ঘদিনের জন্য, প্রায় সারা জীবনের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরতা। বিশেষ আবাসনে বিশেষ নার্সিং কেয়ারের প্রয়োজন হয় তাদের।

সাধারণত তিনটি বিষয়ের ওপর লক্ষ রেখে অটিস্টিক শিশুর চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রথমত, অস্বাভাবিক আচরণ পরিবর্তনের জন্য শিশুর বাবা-মাকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন; যাতে তাঁরা বাড়িতে শিশুর আচরণগত পরিবর্তন করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। আচরণের পরিবর্তন হলে পরিবার ও সমাজে ভবিষ্যতে শিশুটি স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মনোবিদদের পরামর্শ জরুরি।

দ্বিতীয়ত, বিশেষায়িত স্কুলের মাধ্যমে অটিস্টিক শিশুকে একদিকে যেমন প্রথাগত শিক্ষা দেওয়া হয়, তেমনি ভবিষ্যতে তার জন্য উপযোগী যেকোনো পেশাগত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তৃতীয়ত, প্রয়োজন অনুযায়ী বা রোগ লক্ষণ অনুযায়ী কিছু ওষুধ ও সাইকোথেরাপিরও প্রয়োজন হতে পারে। তবে তা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

যে পরিবারে একজন অটিস্টিক শিশু রয়েছে, সে পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে বাবা-মায়ের জন্য প্রয়োজন বিশেষ সেবা-পরামর্শ। তাঁরা যেন অটিস্টিক শিশুটিকে নিজেদের বোঝা মনে না করেন অথবা শিশুর অটিজমকে লুকিয়ে না রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও বিশেষায়িত স্কুলের সাহায্য গ্রহণ করেন, সে বিষয়ে সবারই সচেতনতা প্রয়োজন।

আমাদের দেশেও এখন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছে। আসুন আমরা সবাই সচেতন হই, এগিয়ে আসি এই একটু পিছিয়ে পড়া অটিস্টিক শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে।

ডা· আহমেদ হেলাল
সূত্রঃ প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ২০, ২০০৮।

Previous Post: « নবজাতকের খিঁচুনি
Next Post: দেশে হাঁপানিতে ভুগছে ৭০ লাখ মানুষ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top