• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

স্বাস্থ্যকর ভালোবাসা

February 16, 2010

প্রকৃত অর্থে ভালোবাসার কোনো মৌসুম নেই, নির্দিষ্ট কোনো দিন বা মাসও নেই। ভালোবাসার অনুভব যে কারও মনে সঞ্চারিত হতে পারে যেকোনো সময়। সর্বব্যাপী এই ভালোবাসা কেবল প্রেমিক-প্রেমিকা বা কবি-সাহিত্যিকদেরই মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু নয়, বিজ্ঞানী ও গবেষকদেরও এর প্রতি রয়েছে প্রবল আগ্রহ। তবে তাঁদের আগ্রহের কারণটা ভিন্ন এবং বলতে পারেন নন-রোমান্টিকও। মানব স্বাস্থ্যের ওপর ভালোবাসার প্রভাবই তাঁদের প্রধান ঔত্সুক্য। তাঁদের গবেষণালব্ধ ফল ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ব্যক্তিদের জন্য উদ্দীপকই বটে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভালোবাসা স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক। তবে এখানে ভালোবাসা বলতে আকর্ষণের প্রাথমিক উদ্দামতা, মোহগ্রস্ততা বা কেবল নর-নারীর আদিম প্রেমকে বোঝানো হচ্ছে না; ভালোবাসা বলতে অন্তরঙ্গ ও উপভোগ্য একটি স্থায়ী সম্পর্কের ওপর জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ভালোবাসার ইতিবাচক প্রভাব বুঝতে গবেষণা করা হচ্ছে বিবাহিত ব্যক্তিদের ওপর। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, সুখী দম্পতিরা দীর্ঘায়ু হন; তাঁদের হার্ট অ্যাটাক ও ক্যান্সার হওয়ার হারও অসুখী দম্পতি বা অবিবাহিত ব্যক্তিদের চেয়ে কম। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত মহিলাদের হূদরোগ, লিভার সিরোসিস ও আত্মহত্যাজনিত কারণে মৃত্যুর আশঙ্কা একাকী ব্যক্তিদের তুলনায় ২০ শতাংশ কম। অন্যদিকে একাকী পুরুষদের এই আশঙ্কা সুখী বিবাহিত ব্যক্তিদের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি।
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ অন আনলিমিটেড লাভ-এর গবেষক ইসথার এম স্টার্নবার্গ বলেন, যেকোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসোল হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়। এই কর্টিসোল দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। ভালোবাসা সেই চাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে কমে যায় কর্টিসোল নিঃসরণও। ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের গবেষকেরাও ভালোবাসার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার বিষয়টি সমর্থন করেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যানডেস পার্ট বলেন, স্থিতিশীল, দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসার বন্ধন শরীরে এনডরফিন নামের এক ধরনের রাসায়নিকের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এনডরফিন আবার ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রাকৃতিক ঘাতক কোষের পরিমাণ বাড়ায়।
প্রগাঢ় ভালোবাসা বার্ধক্য বিলম্বিত করে, যৌবনের স্থায়িত্ব বাড়ায়। ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক হার্টম্যাথ ইনস্টিটিউট স্বেচ্ছায় ভালোবাসা অনুভবের এক অনুশীলন উদ্ভাবন করে এবং গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের সেই অনুশীলনটি করায়। নিয়মিত অনুশীলনের ছয় মাসের মাথায় বার্ধক্যরোধী হরমোন হিসেবে পরিচিত ডিহাইড্রোএপিএন্ড্রোস্টেরন বা ডিএইচইএ হরমোনটি তাদের দেহে প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায় এবং নয় মাসের মাথায় তা ৯০ শতাংশ বাড়ে।
হূদ-স্বাস্থ্যের ওপরও ভালোবাসার ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। ১০ হাজার বিবাহিত পুরুষের ওপর এক গবেষণা চালান আমেরিকান গবেষকেরা। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো হূদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে জীবনযাপন করছিলেন তাঁরা। ফলে হূদরোগের কারণে বুকে তীব্র ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি ছিল সবারই। তাঁদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দলে ছিলেন সেই সব পুরুষ, যাঁরা স্ত্রীর সত্যিকারের ভালোবাসায় সিক্ত। অন্যদিকে যাঁরা মনে করতেন স্ত্রীরা তাঁদের ভালোবাসেন না, তাঁরা ছিলেন দ্বিতীয় দলে। পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, দ্বিতীয় দলের পুরুষদের মধ্যে ওই ধরনের তীব্র বুকে ব্যথা হওয়ার হার ছিল প্রথমোক্ত দলের প্রায় দ্বিগুণ।
২০০৭ সালে হিউম্যান কমিউনিকেশন রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, ভালোবাসার অনুভূতি কেবল কাগজে লেখার মাধ্যমেই কমানো যায় হূদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোলেস্টেরল! পাঁচ সপ্তাহব্যাপী গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতিদিন তিনবার ২০ মিনিট করে তাঁদের ভালোবাসার মানুষটিকে উদ্দেশ করে মনের অভিব্যক্তি লিখতে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, তাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে গিয়েছিল উল্লেখযোগ্য হারে।
এমনকি কেবল ভালোবাসা-জড়ানো নিবিড় আলিঙ্গনও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনায় পরিচালিত এক গবেষণায় অংশ নেওয়া যুগলেরা প্রথমে পাশাপাশি বসে গল্প করেন, এরপর গভীর ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরেন একে অন্যকে। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, মহিলাদের ক্ষেত্রে কর্টিসোল হরমোন এবং রক্তচাপ দুই-ই হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে নারী-পুরুষ উভয়েরই শরীরে বন্ধনের হরমোন বলে পরিচিত অক্সিটোসিনের নিঃসরণ বেড়েছে। সাইকোসোমাটিক মেডিসিন জার্নালে এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
শারীরিক বেদনা উপশমেও ভালোবাসার ভূমিকা রয়েছে। এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের যে অংশ ব্যথার অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, সুখী দম্পতিদের সেই অংশ অধিক কার্যকর হয়ে থাকে। প্রায় সোয়া লাখ ব্যক্তির ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, বিবাহিত ব্যক্তিদের মাথা ব্যথা, কোমর ব্যথা-জাতীয় উপসর্গ অবিবাহিতদের চেয়ে কম হয়। প্রকৃত ভালোবাসা জীবনকে সুখময় করে, মানসিক চাপ মোকাবিলা সহজ করে, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমায়, কমায় মাদকাসক্তির আশঙ্কাও।
ভালোবাসার যে স্বাস্থ্যকর একটা দিক আছে, তা জেনে হয়তো প্রেমিক-প্রেমিকারা আনন্দিতই হচ্ছেন। ভালোবাসা হতে পারে বাবা-মা, ভাই-বোন, সন্তান বা সহপাঠী-সহকর্মীর প্রতি। এমনকি পোষা জীবটির প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসাও আপনাকে দিতে পারে স্বাস্থ্যগত সুবিধাটুকু। তাই ভালোবাসুন। ভালোবাসুন আপনার সঙ্গী/সঙ্গিনীকে, আপনার আত্মীয়-বন্ধু-পরিজনকে, ভালোবাসুন মানুষ এবং সৃষ্টির সব জীবকে। ভালোবাসুন এবং সুস্থ থাকুন।

মুনতাসীর মারুফ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০১০

Previous Post: « জলবায়ু পরিবর্তন ও মনের আবহাওয়া
Next Post: কিডনি রোগ: শুরুতে শনাক্ত করলে প্রতিরোধ সম্ভব »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top