• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

মহিলাদের কিডনি রোগ

January 17, 2010

প্রস্রাবের সময় জ্বালা পোড়া, ঘন ঘন অল্প অল্প প্রসাব, প্রস্রাব করার পরও প্রস্রাবের ইচ্ছে থাকা, তলপেটে ও কোমরের দুই পারে পেছনে ব্যথা, কখনও কাপুনি দিয়ে জ্বর আসা, প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত, ঘোলা কখনও রক্তমাখা ইত্যাদি প্রস্রাবের প্রদাহের প্রধান লক্ষণ।

চাঁদের মত ফুটফুটে সুন্দর মেয়ে শাকিলা। প্রথম সন্তানের মা হতে যাচ্ছে। সংসারে আনন্দ আর সাজ সাজ ব্যস্ততা। নতুন আগন্তককে স্বাগতম জানাতে। কিন্তু বিষাদের ছায়া নেমে এল যখন চিকিৎসক জানালেন, গর্ভে বাচ্চার সমস্যা হচ্ছে। তড়িঘড়ি করে অপারেশন করা হল। বাচ্চাটা প্রাণে বেঁচে গেল। কিন্তু মায়ের প্রস্রাব গেল বন্ধ হয়ে। প্রথমে আই.সি.ইউ, পরে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৫ম তলায় শাকিলা ভর্তি হলেন। তার জীবন বেঁচে আছে ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে। আজ সে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বললো-আমার সন্তানের কাছে কখন যেতে পারবো ? আমি নির্দিষ্ট করে বলতে পারিনি, শাকিলার কিডনি আবার কতদিন পর কার্যক্ষম হবে? তবে শাকিলা ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে সুস্থভাবে বেঁচে আছে এবং আশা করছি তার কিডনি আবার কাজ শুরু করবে। যেহেতু তার আকস্মিক কিডনি ফেইল্যূর হয়েছে। তবে শাকিলার মত কতভাগ লোক আছে, যারা এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে। তাদের জন্য আমি কিছু সতর্কতার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই:

মেয়েরা সাধারণত যতদিন পর্যন্ত প্রজননক্ষম থাকে ততদিন তাদের কিডনি রোগ পুরুষদের তুলনায় কম হয়। তবে কতগুলো ক্ষেত্রে মেয়েরা কিডনি রোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন: গর্ভবতী মেয়েরা উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-অ্যাকলাম্পশিয়া, অ্যাকলাম্পশিয়া, গর্ভপাত জনিত কিডনি ফেইল্যুর, প্রস্রাবে প্রদাহ, পূর্ববর্তী কিডনি রোগ সক্রিয় হয়ে উঠা ও অপারেশনজনিত কিডনি ফেইল্যুর এ আক্রান্ত হতে পারে। তা ছাড়া মেয়েদের প্রস্রাবে ইনফেকশন ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি। বাতজনিত রোগ থেকে কিডনি আক্রমণ যেমন: Systemic Lupus Erythematosus মেয়েদের ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় ৯ গুন বেশী হয়ে থাকে।

গর্ভবতী মহিলাদের উচ্চ রক্তচাপ থেকে কিডনি বিকলের সম্ভবনা
স্বাভাবিক সুস্থ মহিলাদের রক্তচাপ গর্ভবতী অবস্থায় নেমে যায়। বিশেষ করে ডায়াসটলিক প্রেসার ১০-১৫ এবং সিসটোলিক ১৫-২৫ মিলি নেমে যায়। কাজেই গর্ভবতী অবস্থায় রক্তচাপ পূর্বের মত থাকাতেই উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে গণ্য করতে হবে। বিশেষ করে ডায়াসটলিক প্রেসার যদি ৯০মি:মি: এর উপরে থাকে তবে তা উচ্চ রক্তচাপ হিসাবে চিকিৎসা করতে হবে। গর্ভবস্থায় মহিলাদের উচ্চ রক্তচাপ চার ভাগে ভাগ করা যায়। প্রি-অ্যাকলাম্পশিয়া, অ্যাকলাম্পশিয়া, কিডনি সংক্রান্ত উচ্চ রক্তচাপ ও পূর্ব থেকেই থাকা উচ্চ রক্তচাপ।

প্রি-অ্যাকলাম্পশিয়া ও অ্যাকলাম্পশিয়া
যে সমস্ত গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভধারণের পর প্রাথমিক পর্যায়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার ২০ সপ্তাহ পর হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়, সাথে প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নির্গত হয়, রক্তে অ্যালবুমিন কমে আসে, এই অবস্থাকে প্রি-অ্যাকলাম্পশিয়া বলা হয়। মনে রাখতে হবে দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ না করলে রক্তচাপ দ্রুত বেড়ে গিয়ে মা ও সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কিডনি ফেইল্যুর হতে পারে। প্রি-অ্যাকলাম্পশিয়ার সাথে যদি খিঁচুনী দেখা যায়, তবে তাকে অ্যাকলাম্পশিয়া বলে। এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য একটা জরুরি অবস্থা। স্ত্রী রোগ ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ সর্তকতার সাথে চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে মায়ের জীবন রক্ষার্থে গর্ভপাত ঘটাতে হবে, নয়তো সময়ের পূর্বেই বাচ্চা ডেলিভারি করাতে হবে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। এ যাত্রায় সুস্থ হয়ে গেলেও ভবিষ্যতে এদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন যেতে থাকতে পারে-ফলে কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রি-অ্যাকলাম্পশিয়া ও অ্যাকলাম্পশিয়ার রোগীদের কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে থাকা উচিত।

পূর্ব থেকে কিডনি রোগ থাকলে গর্ভবতী হওয়ার ঝুঁকি বেশি
যাদের বিভিন্ন ধরনের নেফ্রাইটিস আছে বা যারা ধীরগতিতে কিডনি রোগে ভুগছেন, তাদের গর্ভবতী হওয়ার ঝুঁকি সাধারণ মায়েদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। গর্ভবতী অবস্থায় পূর্ববর্তী কিডনি রোগ বেড়ে যেতে পারে। কিডনির ওষুধ সেবনের জন্য বাচ্চার ক্ষতি সাধন হতে পারে, গর্ভপাতজনিত জটিলতা হতে পারে, কিডনিরোগ বেড়ে গিয়ে মা ও শিশুর মৃত্যু হতে পারে। কাজেই কারো পূর্ব থেকে কিডনি রোগ থেকে থাকলে তা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভধারণ করতে পারেন। কারো যদি বাতজাতীয় কিডনি রোগ থাকে তবে চিকিৎসা করে কমপক্ষে ৬ মাস রোগ নিষ্ক্রিয় থাকার পর কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভধারণ করতে পারেন। যদিও এতে ঝুঁকি থেকেই থাকে।

বংশগত উচ্চরক্তচাপ বা ইজেনশিয়াল হাইপারটেনশন
যাদের পূর্ব থেকে উচ্চ রক্তচাপ ছিল, গর্ভাবস্থায় তা বেড়ে যেতে পারে- তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সময় মনে রাখতে হবে অনেক ওষুধ আছে যা ভ্রুণের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। কাজেই যত্রতত্র প্রেসারের ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। মিথাইল ডোপা, ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার ও কিছু বিটা ব্লকার জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। উরঁৎবঃরপং বা প্রস্রাব বাড়ানোর ওষুধ অঈঊ ইনহিবিটর জাতীয় ওষুধ শিশুর ক্ষতিসাধান করতে পারে। মেয়েদের প্রস্রাবের নালির মুখ প্রজনন অঙ্গ ও পয়নালির খুব কাছাকাছি। তাই জীবাণু সহজেই এসব স্থান থেকে প্রস্রাবের রাস্তায় সংক্রামিত হতে পারে। আবার গোপনাঙ্গেন সাথে থাকাতে স্বামী সহবাসে মূত্রনালী আহত হতে পারে এবং সংক্রামিত হয়ে প্রস্রাবে প্রদাহ হতে পারে। বিশেষ করে নববিবাহিত মেয়েদের এই ধরনের ইনফেকশন বেশি হয়ে থাকে। এদেরকে বলা হয় ‘হানিমোন সিস্‌টাইটিস’। অনেক সময় কারো জরায়ু নিচে নেমে আসে এতে করে কিছু প্রস্রাব করার পরও থলেতে প্রস্রাব থেকে যায়। বিশেষত যে মায়ের অনেক সন্তান ও অপ্রশিক্ষিত দাই দ্বারা ডেলিভারি করানো হয়েছে, এদের এসব কারণে প্রস্রাবে প্রদাহ বেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া গর্ভবতী অবস্থায় প্রস্রাবে ইনফেকশনের হার অনেকগুন বেড়ে যায়। অনেক সময় কোন উপসর্গ ছাড়াই ইনফেকশন হতে পারে। গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে ইনফেকশন কিডনির অনেক ক্ষতি সাধন করতে পারে, তাই বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে গুরুত্বসহকারে এর চিকিৎসা করতে হবে। প্রস্রাবের সময় জ্বালা পোড়া, ঘন ঘন অল্প অল্প প্রসাব, প্রস্রাব করার পরও প্রস্রাবের ইচ্ছে থাকা, তলপেটে ও কোমরের দুই পারে পেছনে ব্যথা, কখনও কাপুনি দিয়ে জ্বর আসা, প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত, ঘোলা কখনও রক্তমাখা ইত্যাদি প্রস্রাবের প্রদাহের প্রধান লক্ষণ।

মনে রাখতে হবে, কারো যদি প্রস্রাবে প্রদাহ সন্দেহ করা হয়-প্রস্রাব ল্যাব টেস্ট কালচার না পাঠিয়ে কখনও জীবানুনাশক ওষুধ খাবেন না। এতে কোন জাতীয় জীবাণু দ্বারা ইনফেকশন হয়েছে এবং কোন ওষুধে কাজ করবে তা নির্ধারণে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।

আর একটি সমস্যা আমরা প্রায়ই পেয়ে থাকি। তা হল গর্ভপাতজনিত জটিলতার কারণে আকস্মিক কিডনি ফেউল্যুর। আমাদের দেশে প্রায়ই দেখা যায় গ্রামের দাই-দের মাধ্যমে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে গর্ভপাত ঘটানো হয়। এর ফলে জরায়ুতে ইনফেকশন হয়, পরে রক্তে ছড়ায় এবং মারাত্মক সেপটিসিমিয়া হয়ে কিডনি ফেইল্যুর হয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে মৃত্যু অনিবার্য হয়। তাই কোন ক্রমেই অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গর্ভপাত ঘটানো উচিৎ নয়।

পরিশেষে আবার শাকিলার কথাই বলি। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যে আলামত পেয়েছি, একে বলে ঐবষঢ় ঝুহফৎড়সব যেখানে লিভার অসুস্থ হয়, রক্ত ভেঙ্গে যায়, রক্তশূণ্যতা দেখা দেয়, সাথে কিডনির কার্যকারিতা লোপ পায়। এর কারণ এখনও জানা যায়নি। আবার অনেক মায়েদের আরও জটিল সমস্যা হতে পারে। যেমন: হঠাৎ করে রক্ত জমাট বাধা, পরে রক্তক্ষরণ ও কিডনি ফেউল্যুর।

এতসমস্ত সমস্যা হাসিমুখে মেনে নিয়েও মায়েরা সন্তানের জন্ম দেয়। লালন করে, জীবন দিয়ে ভালবাসে। এ জন্যই ইসলামের মহান শিক্ষা-‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্‌ত’।

অধ্যাপক (ডা:) এম এ সামাদ
চিফ কনসালটেন্ট এবং বিভাগীয় প্রধান
কিডনি রোগ বিভাগ, ল্যাবএইড স্পেশালাইজ্‌ড হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ১৬, ২০১০

Previous Post: « ত্বকের ভাজ রোধ করবেন কিভাবে
Next Post: চোখে চোখে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top