• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

শিশুর শীতকালীন ডায়রিয়া

December 30, 2009

ডায়রিয়া কী
ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়াকেই ডায়রিয়া বলে।
পায়খানা পাতলা হওয়া অর্থাত্ মলে পানির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া ডায়রিয়ার লক্ষণ। পায়খানা বারবার হলেও মল যদি পাতলা না হয় তা ডায়রিয়া নয়। ঘন ঘন পায়খানা অর্থাত্ পায়খানা সংখ্যায় বেড়ে যাওয়া, সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় তিন বা তারও বেশিবার পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া বলা হয়।
মনে রাখতে হবে, শুধু মায়ের দুধ পান করে এমন শিশু অনেক সময় দিনে ৫-১০ বার পর্যন্ত পায়খানা করতে পারে, যা পেস্টের মতো সামান্য তরল হয়, একে কখনো ডায়রিয়া বলা যাবে না। শিশু যদি খেলাধুলা করে, হাসিখুশি থাকে এবং পায়খানার রং ও গন্ধ স্বাভাবিক থাকে তাহলে এর জন্য কোনো চিকিত্সার প্রয়োজন হয় না।

কোন বয়সে ডায়রিয়া বেশি হয়
ছয় মাস থেকে দুই বছরের শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। তবে ছয় মাসের কম বয়সী যেসব শিশু বুকের দুধের পরিবর্তে গরুর দুধ বা গুঁড়া দুধে অভ্যস্ত এবং বোতলে বা ফিডারে শিশুকে খাওয়ানো হয়, তাদের মধ্যে ডায়রিয়া বেশি হয়। সাধারণভাবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। শিশুর দাঁত ওঠার সঙ্গে ডায়রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আসলে দাঁত ওঠার সময় শিশুর দাঁতের মাঢ়ি শিরশির করে বলে যেকোনো জিনিস কামড়াতে চায়, এ সময়ে লক্ষ না রাখলে শিশু এটা-ওটা মুখে দেয়, এতে রোগজীবাণু প্রবেশ করেও পেটের অসুখ ঘটায়।

ডায়রিয়ার ধরন
অসুখের মেয়াদ অনুযায়ী।
তীব্র ডায়রিয়া: হঠাত্ শুরু হয়ে কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন স্থায়ী হয়, তবে কখনো ১৪ দিনের বেশি সময় নয়।
দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া: শুরু হওয়ার পর ১৪ দিন অথবা তারও বেশি সময়, কখনো কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে।
জলীয় ডায়রিয়া: মল খুবই পাতলা হয়, ক্ষেত্রবিশেষে একেবারে পানির মতো। মলে কোনো রক্ত থাকে না।
আমাশয় বা ডিসেন্ট্রি: মলে রক্ত থাকে, যা চোখে দেখা যায়। নতুন ধারণা মতে, মলে আম রয়েছে কি না তা ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয়।

কেন হয়
রোগজীবাণু খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে ডায়রিয়া ঘটায়। এ ছাড়া খাদ্য বা পানীয় বস্তু, অপরিষ্কার হাত, গ্লাস, চামচ-বাসনপত্র বা সচরাচর ব্যবহূত অন্য জিনিসপত্র, মল, মাছি ইত্যাদির মাধ্যমেও ডায়রিয়া হয়।

কোন শিশুদের ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে
শিশু পুষ্টিহীন হলে। বিশেষ করে যারা হাম, নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। কেননা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

ডায়রিয়ার পরিণতি
তাত্ক্ষণিক পানিস্বল্পতা এবং সময়মতো তার সুচিকিত্সা না হলে অনিবার্য মৃত্যু। শিশু সেরে উঠলেও পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত রোগ দেখা দিতে পারে।

পানিস্বল্পতা কী
সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও লবণজাতীয় পদার্থ শরীরে না থাকলে তাকে পানিস্বল্পতা বলে। ডায়রিয়া হলে পায়খানার সঙ্গে পানি ও লবণজাতীয় পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। এ ছাড়া অধিক পরিমাণ বমির মাধ্যমে শরীর তরল পদার্থ এবং লবণ হারাতে পারে। শরীরের এই ক্ষতি যথাযথভাবে পূরণ না হলে স্বাভাবিকভাবেই পানিস্বল্পতা দেখা দেয়।

পানিস্বল্পতার নানা উপসর্গ
প্রথম দিকে কেবল পিপাসা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু শরীরে পানির ঘাটতি বৃদ্ধি পেলে পিপাসা, অস্থির ও উত্তেজিত ভাব, চামড়া ঢিলে হয়ে যাওয়া, মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়া, ছোট শিশুদের মাথার চাঁদি বসে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। মারাত্মক পানিস্বল্পতার ক্ষেত্রে এগুলো ছাড়াও রোগীর মধ্যে পানির অভাবজনিত শক নিয়ে রোগী প্রায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। তার প্রস্রাব কমে যায় এবং হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। দ্রুত পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা না নিলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
শিশুর শরীরে কতটুকু পানিস্বল্পতা বা ঘাটতি আছে তা নির্ণয় করা ও সে অনুযায়ী চিকিত্সা করতে হবে। ডায়রিয়ার সময় শিশুর শরীর থেকে পানি ও জলীয় অন্যান্য পদার্থ বেরিয়ে যাওয়ার কারণে পানিস্বল্পতা দেখা দেয়। ডায়রিয়ার তীব্রতা অনুসারে এই পানিস্বল্পতার পরিমাণ বিভিন্ন স্তরের হতে পারে। শিশুর অবস্থা লক্ষ করে, পিপাসা দেখে এবং শিশুর পেটের ত্বক ধরে ছেড়ে দিয়ে এই স্তরসমূহ নির্ণয় করে শরীরে পানির ঘাটতির অবস্থান বোঝা যায়।

কীভাবে বুঝবেন শিশুর পানিস্বল্পতা নেই
শিশুকে লক্ষ করুন
অবস্থা ভালো ও সজাগ থাকা, চোখ স্বাভাবিক থাকা,
চোখের পানি স্বাভাবিক, মুখ ও জিহ্বা ভেজা
পিপাসা—স্বাভাবিকভাবে পানি পান করে, তৃষ্ণার্ত নয়।
পেটের ত্বক ধরে ছেড়ে দিলে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।

কখন কিছু পানিস্বল্পতা আছে বলে ধরে নিতে হবে
শিশুকে লক্ষ করুন
তার মধ্যে এই লক্ষণগুলো আছে কি না
অস্থির ও খিটখিটে, চোখ বসে গেছে, চোখের পানি নেই,
মুখ ও জিহ্বা শুকনো, পিপাসা-তৃষ্ণার্ত আগ্রহ ভরে পান করে ও বমি করে। পেটের ত্বক ধরে ছেড়ে দিন, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। শিশুর শরীরে এসবের মধ্যে দুই বা ততধিক লক্ষণ থাকলে এবং তার মধ্যে যেকোনো একটি তারকাযুক্ত (*) চিহ্ন থাকলে রোগী ‘কিছু পানিস্বল্পতা’ স্তরে আছে বোঝা যায়।

চরম পানিস্বল্পতা হয়েছে কীভাবে বুঝবেন
শিশুকে লক্ষ করুন
অবসন্ন, নেতিয়ে পড়া, অজ্ঞান কিংবা ঘুমঘুম ভাব।
চোখ বেশি বসে গেছে এবং শুকনো। চোখের পানি নেই।
মুখ-জিহ্বা খুব শুকনো। পানি পান করতে কষ্ট হয় কিংবা একেবারেই পারে না। পেটের ত্বক ধরে ছেড়ে দিন খুব ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। রোগীর দেহে এসবের মধ্যে দুই বা ততধিক লক্ষণ আছে এবং তার মধ্যে যেকোনো একটি তারকাযুক্ত (*) চিহ্ন থাকলে তবে শিশু ‘চরম পানিস্বল্পতা’ স্তরে আছে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্যাকেট স্যালাইন শরবত তৈরির পদ্ধতি
 প্রথমে সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে।
 আধা লিটার বা আধা সেরের চেয়ে বেশি পানি ধরে এমন একটি পাত্র এবং আধা লিটার বা আধা সের মাপা যায় এ রকম একটি গ্লাস বা অন্য কোনো পাত্র পানি দিয়ে ভালোমতো পরিষ্কার করে নিন।
 স্যালাইন প্যাকেটের ওপরের অংশ কেটে সবটুকু গুঁড়া স্যালাইন তৈরির জন্য পরিষ্কার পাত্রের মধ্যে এমনভাবে ঢেলে নিন যাতে প্যাকেটের মধ্যে দানা না থাকে। পাত্রে আধা লিটার বা আধা সের পানি ঢেলে নিন।
 স্যালাইন ভালো করে গুলে নিন, যাতে কোনো তলানি না থাকে।
 সাধারণত সঠিকভাবে তৈরি করা স্যালাইনের স্বাদ হয় চোখের পানির মতো, নিজে খেয়ে নিন তৈরি করা স্যালাইনের স্বাদ কেমন হলো।

কীভাবে লবণ-গুড় বা লবণ-চিনির শরবত তৈরি করতে হয়
 প্রথমে সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
আধা লিটার বা আধা সেরের চেয়ে বেশি পানি ধরে এমন একটি পাত্র এবং আধা লিটার বা আধা সের মাপা যায় এমন একটি গ্লাস বা অন্য কোনো পাত্র পানি দিয়ে ভালোমতো পরিষ্কার করে নিন।
 শরবত বানানোর পাত্রে আধা লিটার বা আধা সের খাবার পানি মেপে নিন এবং তাতে তিন আঙুলের প্রথম ভাঁজের এক চিমটি লবণ দিন।
 এক মুঠো গুড় বা চিনি পানির মধ্যে দিন এবং ভালো করে মেশান, যেন কোনো তলানি পাত্রের নিচে জমা না থাকে।
 মিশ্রণ চেখে দেখুন, যদি চোখের পানির চেয়ে তা বেশি লবণাক্ত হয়, তবে ওই মিশ্রণ ফেলে দিয়ে পুনরায় কম লবণাক্ত শরবত তৈরি করুন।

তৈরি করা খাবার স্যালাইন কতক্ষণ রাখা যায়
প্যাকেট থেকে তৈরি করা খাবার স্যালাইন ১২ ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। ১২ ঘণ্টা পর যদি তৈরি করা স্যালাইন অবশিষ্ট থাকে তবে তা ফেলে দিয়ে নতুন করে স্যালাইন তৈরি করে খাওয়াতে হবে।

কখন রোগীকে হাসপাতালে বা চিকিত্সকের কাছে পাঠাতে হবে
 তিন দিনের মধ্যে রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে।
 যদি বারবার পানির মতো পাতলা পায়খানা হতে থাকে।
 যদি বারবার বমি হতে থাকে।
 রোগীর যদি বারবার পিপাসা পেতে থাকে।
 রোগী যদি খাওয়া বা পান করা কমিয়ে দেয় বা ছেড়ে দেয়।
 মলে রক্ত দেখা দিলে।
 যদি জ্বর থাকে।
 রোগীর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে। এটি ডায়রিয়া রোগের মারাত্মক এক জটিলতা। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগীর প্রস্রাব না হয়ে থাকে তবে অবিলম্বে তাকে নিকটবর্তী চিকিত্সাকেন্দ্রে পাঠাতে হবে।

মাহমুদ এ চৌধুরী
ডায়রিয়া হলে শিশুর শরীর থেকে পানি ও লবণজাতীয় পদার্থ বেরিয়ে যেতে থাকে। অধ্যাপক, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ৩০, ২০০৯

Previous Post: « নিরাপদ খাবার বেঁচে থাকার জন্য
Next Post: মনের জানালা – জানুয়ারী ০২, ২০১০ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top