• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

মনের জানালা – জুলাই ১৭, ২০১০

July 19, 2010

সমস্যা: আমার বয়স ৩১। ব্যক্তিগত জীবনে আমি মোটামুটি সুখী এবং এক সন্তানের জননী। শিক্ষাজীবন (মাস্টার্স) ভালোভাবে শেষ করলেও সুযোগের অভাবে কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। আমি একজন গৃহিণী। আমি সবার সঙ্গে ভালোভাবে মিশতে পারি, সামাজিকতা রক্ষা করি। স্বামীর সঙ্গেও আমার সম্পর্ক বেশ ভালো এবং আমার স্বামী ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে একজন সফল মানুষ। তিনি আমাকে যথেষ্ট ভালোবাসেন। আমাদের মেয়ের বয়স ১৪ মাস। আমার সমস্যাটা বড় বিচিত্র। মা হওয়ার প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা ছিল আমার। কিন্তু মা হওয়ার পর থেকেই আমার মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। কোনো কারণ ছাড়াই আমি মাঝেমধ্যে ভীষণ রেগে যাই। বিশেষ করে আমার অতটুকু সন্তানের ওপর। আমি তাকে প্রচণ্ড জোরে ধমকে দিই, বকা দিই, গালে একটা থাপড় পর্যন্ত দিয়ে বসি। এ রকম আমার হচ্ছে সন্তান জন্মানোর পর থেকেই। কিছুক্ষণ খুব মেজাজ খারাপ থাকে। কিন্তু আর কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করি না, শুধু বাচ্চাটার সঙ্গে। হয়তো সে আমাকে একটু বিরক্ত করেছে। বাচ্চাটি খুব কান্নাকাটিও করে না। সে বেশ শান্তই। সংবিৎ ফিরে পাওয়ার পর বুঝি, অতটুকু বাচ্চার কি কোনো বুদ্ধি আছে। ও কি ইচ্ছা করে আমার সঙ্গে অমন করেছে। আর ও করলেও কি আমি করতে পারি। তখন প্রচণ্ড অনুশোচনা হয়। কান্নাকাটি করি। এসব নিয়ে স্বামীর সঙ্গেও আমার মনোমালিন্য হয় মাঝেমধ্যে। আমি সত্যিই ভীত যে আমার কি কোনো মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নিজের অতটুকু সন্তানের সঙ্গে আমি যে আচরণ করি। কিছুদিন পর পর হয়তো মাসে দু-একবার আমি এ রকম করে ফেলি। কিন্তু আমি নিজেকে বদলাতে চাই। তার জন্য আপনার সাহায্য কামনা করছি।
নিটোল
মৌলভীবাজার।

পরামর্শ: তোমার চিঠি পড়ে মনে হচ্ছে, তুমি কিছুটা বিষণ্নতায় ভুগছ। বিষণ্ন থাকলে আমরা অকারণে রেগে যাই এবং পরে আবার অনুতপ্ত হই। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অনেক সময় মায়েরা বিষণ্নতার শিকার হয়। এটিকে পোস্টন্যাটাল ডিপ্রেশন বলা হয়। এই ডিপ্রেশনের ধরন ও স্থায়িত্বের ওপর ভিত্তি করে এটিকে বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে। গর্ভকালীন নারীদেহে এসট্রোজেন ও প্রোজেসটেরন হরমোনের পরিমাণ খুব বেড়ে যায়। সন্তান জন্ম নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার তা গর্ভকালীন-পূর্বের সময়ের মতো হয়ে যায়। হরমোনের এই দ্রুত পরিবর্তন মস্তিষ্কেও রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ঘটায় বলে মায়ের বিষণ্নতা সৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া সন্তানের জন্মের পর মায়ের থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে প্রাণশক্তির পরিমাণও কমে যেতে পারে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অবশ্য এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। শারীরিক বিষয়গুলো ছাড়াও পরিবেশেও অনেক পরিবর্তন আসে, যেগুলোর সঙ্গে নতুন মাকে খাপ খাইয়ে চলতে হয়। নতুন অতিথির পরিচর্যার বেশির ভাগ দায়িত্ব মায়ের ওপর থাকে বলে তার যথেষ্ট ঘুম ও বিশ্রাম হয় না। বাড়িতে যে রুটিন বজায় ছিল, তাতেও পরিবর্তন আসে। এই নবজাতক শিশুর দিকে সব সময় খেয়াল করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং বলে এর জন্য পূর্বপ্রস্তুতির প্রয়োজন থাকে। একজন আদর্শ মা হিসেবে সদ্যপ্রসূত শিশুটির সবকিছু সুচারুভাবে করতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা আবার ঘরের কাজগুলোর প্রতিও সমান মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে বলে তার মধ্যে যথেষ্ট মানসিক চাপও সৃষ্টি হয়। যদি মনে হয়, সে নিখুঁতভাবে সবকিছু করতে পারছে না, তাহলে হতাশাও কাজ করতে থাকে। এ অবস্থায় নিজের ও শিশুর প্রতি নির্মম হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। তুমি চিন্তা করে দেখতে পারো, উল্লিখিত বিষয়গুলো তোমার ক্ষেত্রে ঘটছে কি না। যদি তা-ই হয়, তাহলে নিজেকে দোষারোপ না করে বরং নিজের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল ও মনোযোগী হও। তাহলে তোমার মেয়েটির প্রতিও তুমি অনেক বেশি সহানুভূতিশীল হতে পারবে। রাতে ভালো ঘুম না হলে দিনে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেবে। এ ছাড়া কিছুটা সময় নিজের জন্য আলাদা করে রেখে সেই সময়টিতে মানসিক প্রশান্তি সৃষ্টি হয়, এমন কিছু বিষয়ে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে। যেমন—গান শোনা, বই পড়া, হালকা ব্যায়াম করা, প্রকৃতি থেকে আনন্দ নেওয়া ইত্যাদি হতে পারে। বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে যাওয়া, গল্প করা, নতুন মায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, স্বামীর সঙ্গে অনুভূতি বিনিময় করারও চেষ্টা করবে। তুমি যে তোমার মুডের ওঠা-নামার ব্যাপারে সচেতন হয়েছ এবং এটা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছ, সেটা খুবই ইতিবাচক। কারণ মায়ের বিষণ্নতা থাকলে সন্তানের বিকাশের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। যেমন—ওর ভাষা শিখতে সময় বেশি লাগবে, ওর সঙ্গে তোমার আবেগীয় বন্ধন তৈরি করতে অসুবিধা হবে, ওর মধ্যে আচরণের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। প্রত্যেক শিশুর অধিকার রয়েছে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ মা-বাবার সান্নিধ্য পাওয়ার। আমি খুব আশা করব, তুমি নিজের প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল হয়ে ওর অধিকারগুলো নিশ্চিত করবে। আর তুমি যে লেখাপড়ায় ভালো করা সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে নিজেকে এখনো প্রতিষ্ঠিত করতে পারোনি, তা নিয়ে কোনো দুঃখ কাজ করে কি না তাও ভালো করে ভেবে দেখবে। যদি সে ব্যাপারে কষ্ট থাকে, তবে অবশ্যই মেয়ে একটু বড় হলে এ লক্ষ্যে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নিতে পারো। তোমার লেখা খুব গোছানো ও সুন্দর।
আশা করি, কর্মক্ষেত্রেও তুমি নিজের দক্ষতা দেখাতে সক্ষম হবে। যদি দেখো এর পরও বিরক্তি কমছে না, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন হবে। শুভ কামনা রইল।

ড. মেহতাব খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৭, ২০১০

Previous Post: « আবার ডেঙ্গু জ্বর: সতর্ক থাকুন
Next Post: মনের জানালা – জুলাই ২৪, ২০১০ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top