• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Health Tips

Bangla Health Tips, News and Information (বাংলা হেলথ টিপস)

  • স্বাস্থ্য সংবাদ
  • লাইফস্টাইল
  • শরীরচর্চা
  • ১৮+

স্বাস্থ্য কথা

লাইফস্টাইল

শরীরচর্চা

১৮+

মুখচিত্র

March 23, 2010

মুখচিত্র মনের ভেতরকার অনুভূতি কি আর সব সময় মুখ দেখে বোঝা যায়? হয়তো তার দরকারও নেই খুব। কিন্তু যখন দেশের জন্য ভালোবাসা আর সাংস্কৃতিক পরিচয় প্রকাশের কোনো উপলক্ষ হয়, তখন অনুভূতিটা মনে ধারণ করার সঙ্গে প্রকাশ করাটাও তো জরুরি। তাই স্বাধীনতা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি, পয়লা বৈশাখ—নানা উপলক্ষে এত্তটুকুন বাচ্চা থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীদের মুখ যেন হয়ে ওঠে শিল্পীর ক্যানভাস। রং-তুলি দিয়ে তাতে আঁকা হয় নানা নকশা। বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলায় দেখা যায়, গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকা মুখে এঁকে বসে আছে অনেকে। পয়লা বৈশাখের আলপনা, বাংলাদেশের পতাকা, শহীদ মিনার—সবই আসছে মুখচিত্রের বিষয় হিসেবে। দেশের জন্য, আমাদের সংস্কৃতির জন্য অন্তরের ভালোবাসা তো আছেই শতভাগ। সেই ভালোবাসা যেন প্রতীকী রূপ নিয়ে আরও বেশি রঙিন হয়ে ধরা দেয় এই মুখচিত্রে।
প্রাচীন গুহাচিত্রে মুখে রংচং মাখা অনেক মানুষের ছবি দেখা যায়। আবার অনেক আদিবাসী গোষ্ঠীও মুখে রং দিয়ে নানা নকশা আঁকে। নানা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে তৈরি হতো সেই সব রং। সেদিক থেকে মুখচিত্রের ইতিহাস অনেক পুরোনো বলা যায়। অনেক দেশেই মুখে রং দিয়ে নকশা করার চল আছে। খেলার মাঠে তো প্রিয় দেশের পতাকা বা প্রিয় দলের লোগো মুখে আঁকা দর্শকের অভাব নেই। মুখমণ্ডলকে চিত্রপট হিসেবে ব্যবহার করার এই কায়দা তাই খুব নতুন কিছু নয়। ফেস আর্ট বা ফেস পেইন্টিং নামে সেটা পরিচিত। বাংলায় তা হয়েছে মুখচিত্র।
‘আমাদের দেশে ঠিক কবে থেকে চালু হয়েছিল মুখচিত্রের এই রেওয়াজ, তা বলা মুশকিল তো বটেই। তবে সেটা খুব পেছনের কথা নয়। বড়জোর বছর দশেক। বিভিন্ন বিশেষ উপলক্ষ পালনের জন্যই এর প্রচলন হয়।’ জানালেন শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য্য।
হালে এই মুখচিত্রের ধরনের সঙ্গে এসে মিলেছে তারুণ্য, দেশপ্রেম—এ সবকিছুই। শোভাযাত্রা কিংবা সভা-সমাবেশে মুখে লাল-সবুজের পতাকা এঁকে মহানন্দে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছেলেমেয়েরা—এ দৃশ্য তাই এবারও অহরহ চোখে পড়বে আমাদের স্বাধীনতা দিবসে। মুখে প্রিয় বর্ণমালা নিয়ে একই রকম দৃশ্য আমরা দেখেছি কদিন আগে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতেও। বইমেলায় বই কেনার সঙ্গে মুখে একটা কিছু আঁকিয়ে নেওয়ার বায়না ধরেছে শিশুরা। আবার সামনে বৈশাখ এলে একই রকমভাবে বৈশাখের রঙে ঝলমল করবে ছেলেমেয়েদের মুখ। মাঠে বাংলাদেশের পক্ষে কেউ চার-ছয় হাঁকালেই পতাকা-আঁকা মুখগুলো উল্লাসে ভেসে যাচ্ছে। মুখচিত্র এভাবেই জড়িয়ে গেছে আমাদের জীবনের সঙ্গে।
আমাদের দেশে মুখচিত্র প্রচলনের কৃতিত্বটা দিতে হবে চারুকলায় পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের। নানা উপলক্ষে রোদে দাঁড়িয়ে অসীম ধৈর্যের সঙ্গে তারা মুখে ফুটিয়ে তুলেছে নানা নকশা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ফৌজিয়া হক। বন্ধুবান্ধব মিলে দলবেঁধে চলে যেতেন বৈশাখী মেলায়, একুশে ফেব্রুয়ারির শোভাযাত্রায়। ‘এখন অবশ্য আর যাওয়া হয় না। প্রথম-দ্বিতীয় বর্ষের ছেলেমেয়েদেরই এসবে উৎসাহ বেশি।’ জানালেন তিনি। এখন অবশ্য চারুকলার বাইরের অনেক ছেলেমেয়েও তা করছে। অনেকে আবার এ থেকে আয়ও করছে। তবে ফৌজিয়া বলেন, ‘মুখচিত্র করে আসলে আমরা টাকা আয় করার কথা তেমন ভাবিনি, যা পেতাম তা দিয়ে বন্ধুরা মিলে পেটপুরে খেতাম। একজনের মুখে এঁকে ২০ থেকে ১০০ টাকার মতো আয় হয়। রং-তুলি আমরা নিজেরাই কিনে নিই। তবে ইদানীং নানা করপোরেট হাউস আয়োজিত মেলায়, কারও জন্মদিনে আসা বাচ্চাদের মুখে ছবি আঁকতে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এতে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মতো আয় হয়। চারুকলায় এসে খোঁজ করলেই মিলবে মুখচিত্র করার শিল্পী।’
মুখে ছবি আঁকা নিয়ে শিশির ভট্টাচার্য্যের মত অবশ্য একটু ভিন্ন। ‘যা হয়ে উঠতে পারত আমাদের সংস্কৃতির চমত্কার একটা অঙ্গ। এখন তাতে বাণিজ্যের ছোঁয়া লেগেছে। এ নিয়ে তাই আমি আর আগ্রহ পাই না। পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য এখন আর অনেকের উৎসাহ নেই। তারা ছোটে মুখে নকশা এঁকে দু-পয়সা রোজগারের জন্য; বিশেষ করে চারুকলার বাইরের অনেকের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। অনেকে আবার পথচলতি মানুষকে এমনভাবে মুখচিত্র আঁকার অনুরোধ করে, যা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’
তবে এসব ছাপিয়েও মুখচিত্রকে উপস্থাপন করা যায় অনেক আকর্ষণীয়ভাবে। পথ বাতলে দেন শিশির ভট্টাচার্য্য নিজেই। ‘বিভিন্ন উপলক্ষে চারুকলার ভেতর একটা কর্নার তৈরি করতে হবে। এখানে শিক্ষার্থীরা মুখচিত্র এঁকে দেবে। বিনে পয়সায়। এটা হবে মানুষকে স্বাগত জানানোর একটা প্রথা।’
সামনে স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশের পতাকা, স্মৃতিসৌধ মুখে এঁকে দিনটি পালন করবেন অনেকেই। তবে একটা ব্যাপারে সাবধান—মুখে কিন্তু যে কোনো রংই ব্যবহার করা যায় না, সেটা মুখে ব্যবহারের উপযোগী কি না দেখে নিতে হবে। যিনি আঁকবেন তাঁকে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে। আর যিনি আঁকাবেন তিনি জেনে নেবেন, রংটি মুখে ব্যবহারের উপযোগী কি না।

রুহিনা তাসকিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২৩, ২০১০

Previous Post: « ট্রের নান্দনিকতায়
Next Post: আগুন থেকে সাবধান »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Bangla Health – Bangla Library – Bangla PDF

Return to top